আমিনুল ইসলাম, দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌরসদরের সিংগা বাজার থেকে চৌবাড়িয়া হয়ে হোজা প্রধান পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সড়ক এখন পথচারীদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কটির বেহাল দশায় এটি কাঁচা না পাকা, তা বোঝা দুষ্কর। ফলে এই সড়ক এখন এলাকাবাসীর সীমাহীন দুর্ভোগের কারণ।
সংস্কারের অভাবে সড়কটি খানাখন্দে ভরে গেছে এবং বর্তমানে যান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই পুরোনো সড়কটি সংস্কারের জন্য বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও কোনো কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসেনি। এর ফলে বহরমপুর, চৌবাড়িয়া, মাড়িয়া, ও হোজা গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। পুঠিয়া উপজেলার ভাল্লুকগাছি গ্রামের মানুষও এই সড়ক ব্যবহার করে যাতায়াত করেন। সড়কটি যান চলাচলে অনুপযোগী হওয়ায় অনেক চালক বিকল্প পথ ব্যবহার করছেন, যার ফলে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
দুর্গাপুর সিংগা সদর থেকে হোজা গ্রাম পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, সড়কটির বেশিরভাগ অংশে পানি জমে আছে এবং খানাখন্দে ভরা। সড়কটির কয়েক হাত পরপর বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে বৃষ্টির পানি জমে আছে। অনেক জায়গায় পথচারীরা যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে পার হচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সড়কটি পৌরসভার প্রধান সড়কগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং পাশের পুঠিয়া উপজেলার লোকজনও এটি ব্যবহার করেন। প্রায় ৮ বছর আগে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সড়কটি পাকাকরণ করা হয়েছিল, কিন্তু দু-তিন বছরের মধ্যেই ভাঙন শুরু হয়। এখন বেশিরভাগ সড়কই খানাখন্দে ভরা। দীর্ঘদিন ধরে দুই উপজেলার মানুষ এই ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে চলাচল করছেন। তবে অধিকাংশ পথচারী দুই কিলোমিটার সড়কের দুর্ভোগ এড়াতে ৬ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করছেন।
হোজা গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী নবী জানান, গত দুই বছর ধরে সড়কটি এত খারাপ হয়ে গেছে যে গাড়িতে চড়ে তো দূরে থাক, হেঁটেও চলাচল করা যাচ্ছে না। মাড়িয়া গ্রামের আহসান আলী বলেন, সড়ক খারাপ হওয়ায় গত ৩ বছর ধরে তিনি অন্য সড়ক দিয়ে হাটে-বাজারে যান। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, "এই সড়কের কোনো মা-বাপ নেই। অনেক নেতা এলো গেলো কিন্তু সড়কটি সংস্কার হলো না।" ভ্যানচালক ফরহাদ হোসেন জানান, ৭ বছর ধরে এই সড়কে চলতে গিয়ে প্রতিদিন তার ভ্যান নষ্ট হয়।
বহরমপুর গ্রামের তানজিল খাঁ বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় মূলত সড়কটি আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিংগা গ্রামে জামালের বাড়ির সামনে সড়কের ওপর সবসময় পানি জমে থাকে, কারণ আশেপাশের কয়েকটি বাড়ির ব্যবহৃত পানি সড়কের উপর ফেলা হয়। চৌবাড়িয়া গ্রামের ওয়াইজুল বলেন, হাটবারের দিনে কৃষকরা তাদের পণ্য বাজারে নিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন, কারণ রাস্তা খারাপ হওয়ায় সময়মতো যানবাহন পাওয়া যায় না।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সাহাবুল হক জানান, সড়ক সংস্কারে বরাদ্দ নেই, তাই দেরি হচ্ছে। এই সড়কের জন্য নতুন করে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী মাসুক-ই-মোহাম্মাদ বলেন, সম্প্রতি সড়কটি পরিদর্শন করা হয়েছে এবং এর খারাপ অবস্থা দেখা গেছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন দপ্তরে জানানো হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে দ্রুত সড়কটি সংস্কার করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.