মো. আসাদুজ্জামান আসাদ, নেছারাবাদ (পিরোজপুর)
পিরোজপুর জেলার কৃষিনির্ভর নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলায় মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নেই কোনো পরীক্ষাগার বা প্রয়োজনীয় যন্ত্র। ফলে এলাকার প্রায় ৫০ হাজার কৃষক মাটি পরীক্ষা না করেই ফসল চাষে নেমে পড়ছেন। এতে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করেও কাঙ্ক্ষিত ফলন পাচ্ছেন না কৃষকরা, কমছে মাটির উর্বরতা।
কৃষক মিজানুর রহমান জানান, "ক্ষারীয় মাটিতে ধান, ভুট্টা, আখ, তুলা, নারিকেলসহ বিভিন্ন ফসল ভালো হলেও অম্লীয় মাটির ফসল এখানে কম ফলন দেয়। আর মাটির pH মান না জেনে সার প্রয়োগ করায় ক্ষতি হয় উভয়েরই—মাটির ও কৃষকের।"
মাটি পরীক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চপল কৃষ্ণ নাথ বলেন, “একটি ধান গাছ হেক্টরপ্রতি ১০৮ কেজি নাইট্রোজেনসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান মাটি থেকে গ্রহণ করে। মাটির পুষ্টি ঘাটতি পূরণে সঠিক পরিমাণ সার প্রয়োগ করা জরুরি। কিন্তু যন্ত্র না থাকায় কৃষকরা নির্ভর করছেন ৫২ কিলোমিটার দূরে বরিশাল বিভাগীয় মৃত্তিকা অফিসের উপর, যা সময় ও ব্যয়সাপেক্ষ।”
এ বিষয়ে 'মাটি প্রকৃতি অ্যাগ্রো ফার্ম'-এর পরিচালক সাবিহা আফরিন বলেন, “আমি সরকারি প্রকল্পে ১২ দিনের ট্রেনিং নিয়েছি, কিন্তু সেখানে মাটির pH পরীক্ষার বিষয়ে কোনো ক্লাসই ছিল না। অথচ চাষাবাদের পূর্বে মাটি পরীক্ষা করাই হওয়া উচিত প্রথম ধাপ।”
পিরোজপুর জেলা মনিটরিং কর্মকর্তা এস এম মনিরুজ্জামান জানান, "একই জমিতে বারবার চাষাবাদের ফলে পুষ্টি উপাদান কমে যাচ্ছে। এর ফলে প্রতিবছর ২০ ভাগ করে রাসায়নিক সারের ব্যবহার বাড়াতে হচ্ছে, যা মাটিকে দ্রুত অনুর্বর করে তুলছে।"
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাটির pH পরীক্ষার যন্ত্রের দাম মাত্র ৭৫০ টাকা থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। অথচ সরকার চাইলে কৃষকদের বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের সময় এই যন্ত্র সহজেই সরবরাহ করতে পারে। এতে কৃষকরা নিজেরাই নিজেদের মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সঠিক সারের ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবেন।
স্থানীয় কৃষকদের দাবি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও সরকার যেন অতি দ্রুত ইউনিয়ন বা উপজেলা পর্যায়ে মাটি পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তা না হলে মাটির অবস্থা দিন দিন আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়বে এবং কৃষি উৎপাদনে পড়বে মারাত্মক প্রভাব।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.