যশোর প্রতিনিধি
যশোরের চৌগাছা কাঁচামাল হাটের মাঝখানে মডেল মসজিদ নির্মাণ করে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির অভিযোগে ভূমি সচিব, যশোর জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা ইসলামসহ আটজন সরকারি কর্মকর্তাকে শোকজ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানতে চেয়েছেন—জনগণের ক্ষতি করে কেন এই স্থানে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলো।
সোমবার (৮ জুলাই) বিচারপতি আখতার হোসেন ও বিচারপতি ফয়সাল হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আবেদনকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমীর হোসেন।
আদালত জানায়, হাট ইজারাদার আতিকুর রহমান লেন্টু ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকায় হাটের ইজারা নিয়েছেন। কিন্তু ইজারা নেওয়ার তিন মাসের মাথায় হাটের মূল অংশে মডেল মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। এতে করে হাটে থাকা ৫৮ জন কাঁচামাল ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তাঁরা লিখিতভাবে এর বিরোধিতা করেছেন।
এ প্রসঙ্গে ইউএনও ফারজানা ইসলাম জানান, “আমরা একটি চিঠি পেয়েছি। আদালতের আদেশ অনুযায়ী যথাযথ ব্যাখ্যা পাঠানো হবে।”
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, চৌগাছা কাঁচামাল হাট এই অঞ্চলের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। হাটের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে মসজিদের জন্য নির্ধারিত স্থানে ১১০টিরও বেশি কাঁচামালের আড়ৎ রয়েছে। এসব আড়তে প্রায় ২০০ পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের দাবি, মসজিদ অন্যত্র নির্মাণ করা হোক।
ব্যবসায়ী মতবেল বিশ্বাস বলেন, “মসজিদ অবশ্যই হোক, এটি আমরা চাই। কিন্তু আমাদের শত বছরের হাটের বুকে কেন? এই হাট উচ্ছেদ হলে তিন হাজারের বেশি মানুষ পথে বসবে।”
হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান লেন্টু বলেন, “আমার কোটি টাকার বিনিয়োগের ক্ষতি হবে। কোনো মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই হাট ধ্বংস করতে চাইছে। যদি মসজিদ নির্মাণ করতেই হয়, তবে আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, হঠাৎ করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে প্রভাবশালী কোনো মহলের হাত রয়েছে, যা কাঁচাবাজার ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে।
এখন দেখার বিষয়, আদালতের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন কী ব্যাখ্যা দেয় এবং শেষ পর্যন্ত মসজিদের স্থানান্তর হয় কি না।