যশোর প্রতিনিধি
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় (জিএসটি) চান্স পাওয়ার পরও নিজের ভুলের কারণে বঞ্চিত হয়েছেন যশোরের ভ্যান চালকের মেয়ে মেধাবী মীম আখতার শিখা। তিনি ভর্তি ফি জমা দিলেও নির্ধারিত সময়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিতে না পারায় স্বপ্নের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেননি।
যশোর সদর উপজেলার তপস্বীডাঙা গ্রামের আসাদুল বিশ্বাসের মেয়ে মীম আখতার শিখার পরিবার জানায়, বাবা রিকশা চালক এবং তিনি ও তার দুই বোন পড়ালেখা করছেন। অনেক কষ্টে পাঁচ হাজার টাকা জোগাড় করে গত ৩০ জুন অনলাইনে ভর্তি ফি পরিশোধ করেন মীম। ভর্তি নোটিশে বলা হয়েছিল ১ থেকে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু মীম বিষয়টি ভুল বুঝে ৩ জুলাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিতে যান, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় কাগজপত্র জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এরপর ৭ জুলাই গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে টুরিজম এন্ড হসপিটালিজম ম্যানেজমেন্ট বিষয়ের জন্য যান, কিন্তু সেখানে কর্তৃপক্ষ তার কাগজপত্র গ্রহণ করেনি। মীম জানান, “আমি বুঝতে পারছি না এখন কি করবো। সুযোগ পেলেও স্বপ্নপূরণ অধরাই থেকে গেল।”
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহেল হাসান বলেন, “নির্ধারিত সময়ের পর আমাদের কাছে আসলে কিছু করার নেই। কারণ সময়মতো ভর্তি না হলে সিস্টেমে তার সিট স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিলেট হয়ে যায়। ভর্তি কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত হয়, তাই শিক্ষার্থীকে নিকটস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।”
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিএসটি ভর্তি কমিটির চিফ কো-অডিনেটর অধ্যাপক ড. শিরিন নিগার বলেন, “নির্ধারিত সময়ে ভর্তি না হলে শূন্যস্থান অটোমেটিক মাইগ্রেশনের মাধ্যমে পূরণ হয়। সফটওয়্যার ভিত্তিক এই সিস্টেমের বাইরে আমাদের কিছু করার থাকে না।”
জিএসটি ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজিম আখন্দ জানান, “ভর্তি কার্যক্রম সম্পূর্ণ সফটওয়ার ভিত্তিক। সময়মতো ভর্তি না হলে সে শিক্ষার্থী বাদ পড়ে এবং তার সিট ওর জন্য অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের কাছে চলে যায়। নিয়মে ব্যত্যয় ঘটালে পুরো সিস্টেম ভেঙে পড়বে, তাই ভর্তির সময়সীমা ছাড়িয়ে কাউকে ভর্তি দেওয়া সম্ভব নয়।”