খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে উপজেলার কবাখালি ও মেরুং ইউনিয়নের শতাধিক বাড়িঘর ডুবে গেছে। হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠতে বাধ্য হয়েছেন।
স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দুই ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। এর মধ্যে কবাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ২০টি পরিবার অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন কবাখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞান চাকমা। তিনি বলেন, পাহাড়ি ঢলে আমাদের নিচু এলাকাগুলো হঠাৎ করে তলিয়ে গেছে। তবে বৃষ্টি থামলে পানি দ্রুত নেমে যাবে বলে আমরা আশা করছি।
এদিকে মেরুং ইউনিয়নের বড় মেরুং স্টিল ব্রিজ এলাকায় দীঘিনালা-লংগদু সড়ক পানিতে তলিয়ে থাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সড়কপথে যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়েছে। যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জরুরি প্রয়োজনে নৌকা ব্যবহার করে যাতায়াত করছেন।
ছোট মেরুং বাজার, চিটাগাংপাড়া ও আশপাশের গ্রামের অনেক ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকেই জরুরি জিনিসপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
দীঘিনালা উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অখিল শিকারী বলেন, দুপুরের পর হঠাৎ করে মাইনি নদীর পানি বেড়ে যায়। ফলে বড় মেরুং স্টিল ব্রিজ এলাকার সড়কটি তলিয়ে গেছে। যান চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ নৌকা ব্যবহার করছে। দুর্গত মানুষের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে উপজেলায় পাঁচ শতাধিক মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। আমরা তাদের জন্য পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি সহায়তার ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। ইতোমধ্যে বৃষ্টি কিছুটা কমে আসছে। বৃষ্টি বন্ধ হলে পানি দ্রুত নেমে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে। দুর্গতদের দ্রুত সহায়তা এবং উদ্ধার কাজ চালিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে অখিল শিকারী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, বৃষ্টি না থামা পর্যন্ত পানি আরও বাড়তে পারে। ইতোমধ্যেই কৃষিজমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে খাগড়াছড়ি সদরে দুপুরের পর বৃষ্টি কিছুটা কমেছে। ফলে চেঙ্গি নদীর পানি নামতে শুরু করেছে। তবে আকাশ এখনও মেঘাচ্ছন্ন থাকায় যে কোনো সময় বৃষ্টি আবারও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।