এস আই মল্লিক, ঝিনাইদহ
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বিএসএফকে ‘খুনি বাহিনী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “বিএসএফ আর সীমান্ত রক্ষী নয়, এটি একটি খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।” বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে আয়োজিত এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা ও পথসভা’য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “মাত্র এক সপ্তাহ আগে বিএসএফ একজন বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গিয়ে চোখ তুলে হত্যা করে লাশ ফেরত দিয়েছে। গত ২৫ বছরে বিএসএফ সীমান্তে ১২০০ মানুষকে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ড আর মানবাধিকার লঙ্ঘন মেনে নেব না।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এক ধরনের প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। কিন্তু আমরা ঐক্যমতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ আদায় করব ইনশাআল্লাহ। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমাদের সম্মান ও সহানুভূতি থাকবে সবসময়।”
সভায় এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব তারেক রেজা বলেন, “জুলাই হত্যাকাণ্ডের পেছনে স্বৈরাচারী সরকারের হাত ছিল, যার প্রমাণ বিবিসি ইতোমধ্যে দিয়েছে। খুনি শেখ হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত দেশে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না।”
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব তারেক রেজা, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সভাপূর্ব পদযাত্রাটি বিকালে চুয়াডাঙ্গা থেকে আগত প্রতিনিধি দল জোহান পার্কে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ শেষে বিকাল ৬টার পর পানি উন্নয়ন বোর্ড চত্বর থেকে শুরু করে পায়রা চত্বরে এসে শেষ করে। মাগরিবের নামাজের পর শুরু হয় পথসভা। ঝিরিঝিরি বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে হাজারো মানুষ এতে অংশ নেন।
নেতারা ঘোষণা দেন, “জুলাই সনদ, বিচার এবং কাঙ্ক্ষিত সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
সভায় শহীদ রাকিব হোসেনের মা-বাবাও বক্তব্য দেন এবং হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস, যিনি শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞা ও আন্দোলনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এনসিপি দাবি জানায়, একটি নতুন, স্বচ্ছ, মানবিক এবং জনগণের অধিকারভিত্তিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন জরুরি।