যশোর প্রতিনিধি
টানা ভারী বর্ষণে যশোরের কেশবপুর পৌর এলাকা ও আশপাশের অঞ্চলে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার অন্তত ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। প্রায় ১০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
গত দুই সপ্তাহের অব্যাহত বর্ষণে নদীগুলোর পানিপ্রবাহ ব্যাহত হয়ে পড়েছে। নদীতে কচুরিপানার স্তূপ জমে থাকায় স্বাভাবিক স্রোত না থাকায় উজান থেকে নেমে আসা পানি পৌর শহরসহ আশপাশের অঞ্চল প্লাবিত করে ফেলেছে। নতুন নতুন এলাকা প্রতিনিয়ত পানির নিচে চলে যাচ্ছে।
প্লাবনে কেশবপুর পৌর শহরের গমপট্টি, আলতাপোল, উপজেলা ভূমি অফিস, কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ ও মহিলা ফাজিল মাদ্রাসাসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জনবসতিপূর্ণ অঞ্চল তলিয়ে গেছে। হাটবাজার, রাস্তা ও ঘরবাড়ি পানির নিচে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন দোকান মালিকরা।
প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গমপট্টি, হাজি মকসেদ বিশ্বাস সড়ক, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত সড়ক, চারআনি বাজার, মাছ-মাংসের বাজার ও গরু-ছাগলের হাট সম্পূর্ণভাবে পানির নিচে। বিকল্প বাজার হিসেবে তরকারির পাইকারি ও খুচরা বাজার স্থানান্তর করা হয়েছে মাইকেল গেটে, আর গরুর হাট বসানো হয়েছে সাগরদাঁড়ি সড়কে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেখসোনা খাতুন বলেন, “পৌর শহরের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হয়েছে। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে বাজার ও হাট স্থানান্তর করা হয়েছে। ১২টির বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডুবে গেছে, ১০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি। স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে প্রশাসন কাজ করছে।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ ফিরোজ আহম্মেদ জানান, “বৃষ্টির পানিতে অন্তত ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। পাঠদান সম্ভব নয়। কেবল কেশবপুর সরকারি কলেজের অডিটোরিয়ামে বিকল্পভাবে ক্লাস চালু রয়েছে।”
কাটাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় বর্মন বলেন, “বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ প্লাবিত। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশই করা যাচ্ছে না। গত বছরও চার মাস ক্লাস বন্ধ ছিল। এবার স্থায়ীভাবে উঁচু ভবন নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরি।”
কেশবপুরবাসীর আশঙ্কা, বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপ আরও বাড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। স্থানীয়রা দ্রুত দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।