নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় বালতির পানিতে ডুবে তামান্না আক্তার (৮) নামের দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৯ জুলাই) সকালে উপজেলার গুয়াতা মৃধা পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তার মৃত্যুকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে নানান প্রশ্ন ও জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। কেউ একে দুর্ঘটনা বললেও, কেউ কেউ এটিকে হত্যা বলেও সন্দেহ করছেন।
নিহত তামান্না ওই গ্রামের প্রবাসী রাজন মৃধা ও সানজিদা আক্তার দম্পতির মেয়ে এবং একটি স্থানীয় মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে রাজন ও সানজিদার বিয়ে হয়। পরে ২০১৭ সালে তামান্না মাতৃগর্ভে থাকাকালীন রাজন মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। পারিবারিক কলহের কারণে ২০২০ সালে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে এবং এরপর থেকেই তামান্না মা সানজিদার সঙ্গে থাকতো।
তামান্নার মা সানজিদা আক্তার বলেন, “সকাল ১০টার দিকে আমি তাকে বাড়িতে রেখে পাশের বাড়িতে যাই। ফিরে এসে দেখি সে বাড়িতে নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পর গোসলখানায় গিয়ে দেখি একটি ৩০ লিটারের পানিভর্তি বালতির মধ্যে মুখসহ শরীর ডুবানো অবস্থায় পড়ে আছে।” তিনি আরও জানান, তামান্নার শ্বাসকষ্ট ছিল এবং ধারণা করা হচ্ছে খেলতে গিয়ে সে বালতিতে পড়ে গেছে।
তবে তামান্নার দাদা এরশাদ আলী ঘটনার নেপথ্যে ষড়যন্ত্র দেখছেন। তিনি বলেন, “তামান্না ছোট শিশু নয়, সে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। এত বড় মেয়ে কি বালতির পানিতে পড়ে মারা যেতে পারে? আমি এই ঘটনায় হত্যার সন্দেহ করছি এবং সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।”
রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাফিজ মো. রায়হান জানান, “খবর পেয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ইউডি (অস্বাভাবিক মৃত্যু) মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা বলছেন, তদন্ত সঠিকভাবে হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।