খুলনা প্রতিনিধি
খুলনার তেরখাদা উপজেলায় হঠাৎ করে ভাইরাসজনিত জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বর্ষার শুরু থেকে উপজেলার প্রতিটি গ্রামেই বাড়ছে জ্বর ও পেটের অসুখে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এতে করে তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর চাপ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদের অধিকাংশই ভাইরাল ফিভার ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি।
৮ বছর বয়সী মাদ্রাসাছাত্র আবিদ হাসান কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছে। তাকে নিয়ে হাসপাতালে আসা মা আইরিন আক্তার বলেন, ‘জ্বর কিছুতেই কমছে না। বাসায় খুব কষ্ট হচ্ছিল, তাই হাসপাতালে আনলাম।’
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. পার্থ প্রতিম দেবনাথ বলেন, ‘বর্তমানে রোগীর তুলনায় চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা অনেক কম। শয্যা সংকটের কারণে অনেক রোগীকে বারান্দা ও করিডোরে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।’
স্থানীয়রা জানান, এমন কোনো গ্রাম নেই যেখানে একাধিক মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হননি। পাশাপাশি কয়েকটি এলাকায় ডায়রিয়ারও বিস্তার ঘটেছে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, বর্ষাকালে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া সাধারণ ঘটনা হলেও এবারে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। তারা পরামর্শ দিয়েছেন, তিন দিনের বেশি জ্বর থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে। পাশাপাশি বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা এবং মশা নিধনে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রোগ প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞেরা পরামর্শ দিয়েছেন, ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল যেমন পেয়ারা, আনারস, আমড়া, লেবু ইত্যাদি বেশি করে খাওয়ার।
রোগীর মা পলি বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে আমেনা এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছে। সোমবার হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি, কিন্তু এখনো জ্বর কমেনি।’
স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, শুধু হাসপাতালের ওপর নির্ভর না করে প্রত্যেককে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারের মাধ্যমেই এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব।