মোছা: কাবা কাকলি, কবি নজরুল কলেজ প্রতিনিধি
২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্রসমাজ নির্ভীক ভূমিকা রাখে। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কবি নজরুল সরকারি কলেজের ছাত্ররাজনৈতিক সংগঠনগুলোর ভূমিকাও ছিল প্রশংসনীয়। এ আন্দোলনে কলেজের চার শিক্ষার্থী শহীদ হন।
ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোঃ নাজমুল হাসান জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া এই গণঅভ্যুত্থান এক পর্যায়ে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের পতনের রূপ নেয়। তিনি বলেন, “আমরা লাঠি, ইট যা পেয়েছি তাই নিয়ে প্রতিরোধ গড়েছি। কলেজের সামনে থেকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার একপর্যায়ে আমার সহপাঠী ইকরাম হোসেন কাউসার পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।”
ছাত্রশিবির শাখার সেক্রেটারি হাসিব বিন হাসান বলেন, “১৪ জুলাই বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে আমরা আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করি। পরে শহীদ মিনার থেকে কোর্ট এলাকায় গেলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়। আমি নিজেও বাম হাতে গুলিবিদ্ধ হই। পরে আমাকে আত্মগোপনে যেতে হয়।”
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি নাহিদ হাসান বলেন, “১২ জুলাই আন্দোলনে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাকে অপহরণ করে নির্যাতন করে। এরপরও ১৪ জুলাই শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে আবারো আওয়াজ তুলি। এই আন্দোলন থেকে শেখ হাসিনার পতন ঘটে।”
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি দেওয়ান মুহাম্মদ তাজিম বলেন, “কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঠে নামাতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সাহস ও নেতৃত্ব দেয়। আমাদের নেতা মোস্তফা কামাল তার বন্ধুর মৃতদেহ পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে গিয়ে পুলিশের গুলির মুখে পড়ে যান।”
এই গণঅভ্যুত্থানে কবি নজরুল সরকারি কলেজের ছাত্র সংগঠনগুলোর আত্মত্যাগ, সাহসিকতা ও ঐক্য ছিল আন্দোলনের অন্যতম প্রেরণা। শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণজাগরণকে স্মরণ করে শিক্ষার্থীরা আজও নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখে।