রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
খুলনার তেরখাদা উপজেলায় অবৈধ জালবিরোধী অভিযান চলাকালে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান ও তাঁর সহকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একদল জেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা, হামলা ও জব্দকৃত মালামাল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ রবিবার (২০ আগস্ট) দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।
ঘটনাটি ঘটে গত ৪ আগস্ট বিকেলে, উপজেলার পাতলা এলাকার হাতিশুরা খালে। অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন মৎস্য কর্মকর্তা ও তাঁর টিম, যাঁদের সহায়তা করছিল পুলিশ সদস্যরা। তারা ওই খালে নিষিদ্ধ চায়না ও কারেন্ট জাল উদ্ধারে কাজ করছিলেন।
সংঘবদ্ধ হামলার অভিযোগ
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আজিজুল মোল্লার মাছের ঘের সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে ১০টি নৌকায় করে প্রায় ৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল অভিযানকারী টিমকে ঘিরে ফেলে। এরপর তারা সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে এবং জব্দ করা প্রায় ৫০টি অবৈধ জাল ছিনিয়ে নেয়।
এ সময় অভিযুক্তরা ভিডিও ধারণে বাধা দেয় এবং মৎস্য কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা প্রতিবাদ করলে তারাও হামলার শিকার হন এবং আহত হন।
আসামিদের তালিকা
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে রতন শেখ (৫০) নামের একজনকে। আরও নাম রয়েছে কালু শেখ (১৬), আক্কাস মোল্লা (২৫), হুসাইন সাকাওয়াতি (২০), রহমত শেখ (২৫), মজিদ মোল্লা (২৫) ও জাহির মোল্লা (২৫)-এর। অজ্ঞাতনামা আরও ২০–২৫ জনকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
আইনানুগ ব্যবস্থা
তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানিয়েছেন, মামলায় অভিযান চালিয়ে কালু শেখ ও সজীব নামের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
তিনি বলেন, “এটা অত্যন্ত গুরুতর ঘটনা। সরকারি দায়িত্ব পালনের সময় একজন কর্মকর্তার ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অবৈধ জালবিরোধী অভিযান
দেশের জলজ সম্পদ রক্ষায় নিষিদ্ধ চায়না ও কারেন্ট জাল ব্যবহার বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে মৎস্য বিভাগ। এসব জালের কারণে মাছের প্রজনন ব্যাহত হয় এবং নদী–খালের জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে পড়ে।