নোয়াখালী প্রতিনিধি
রাজধানীর মৌচাকে সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পার্কিংয়ে প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার দুটি গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিহতরা হলেন—চালক জাকির হোসেন (৩০) ও তার বন্ধু মিজান (২৮)।
নিহত জাকির হোসেন চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের লটপটিয়া গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন সৌদি আরবে থাকার পর দেশে ফিরে এইচএসসি পাশ করে ড্রাইভিং শেখেন তিনি। পরিবার জানায়, আমেরিকায় পাঠানোর কথা বলে লক্ষ্মীপুরের দত্তপাড়ার ফজলুল হকের কাছে জাকির ১৯ লাখ টাকা দেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও বিদেশে পাঠানো হয়নি, বরং টাকা ফেরত চাইলে নানা হুমকি দেওয়া হয়। স্বজনদের ধারণা, এই বিরোধই হত্যার পেছনে মূল কারণ হতে পারে।
গত শনিবার রোগী আনতে জাকির নোয়াখালী থেকে ঢাকায় যান। রোগীর অপারেশন শেষে আরও দুই দিন হাসপাতালে থাকতে হওয়ায় গাড়িটি বেজমেন্টে পার্কিং করে রাখা হয়। বুধবার বিকেলে পার্কিংয়ে থাকা গাড়ি থেকে জাকির ও রামনারায়নপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোমাতলি গ্রামের মিজানের পচনধরা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
জাকিরের মা কসুম বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলেকে আমেরিকা নেওয়ার জন্য ১৯ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। তারা ছেলেকে বিদেশে না নিয়ে উল্টো হুমকি দিয়েছিল। তারাই আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই।”
অন্য নিহত মিজান একই উপজেলার বাসিন্দা। তার বড় বোন রোজী বেগম জানান, ভাই জাকিরের মাধ্যমেই ড্রাইভিং শিখেছিল। শনিবার জাকিরের সঙ্গে ঢাকায় গিয়েছিল, কিন্তু পরে মরদেহ পাওয়া গেল গাড়ির ভেতরে।
স্থানীয়রা ও দুই পরিবারের স্বজনরা দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। খিলপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, “এ ধরনের জঘন্য হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা উচিত।”