নবধারা ডেস্কঃ
আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হলো না গরিবের জন্য চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাওয়া গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী ইউনিয়নে পথে পথে ফেরি করে সিঙ্গাড়া বিক্রি করা মোঃ মজনু মোল্লার (৫৫)।
আজ সোমবার রাত তিনটার দিকে হূদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে রাত ৮ টার দিকে অসুস্থতা বোধ করায় তাকে তার নিজ বাড়ি থেকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোঃ পারভেজ রুমী বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে সিঙ্গারা বিক্রি করে মজনু মোল্লা মানুষের সেবা করে আসছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে চেয়ে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছিলেন। আজ তিনি চলে গেলেন। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
প্রতিবেশী তৈয়ব মেম্বার বলেন, মজনু মানুষের দুঃখ কষ্ট সহ্য করতে পারতেন না তাই তিনি গরিবের হয়ে নির্বাচনে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন।
উল্লেখ্য গত মাসের ২২ জুন “টুঙ্গিপাড়ার পথে পথে সিঙ্গাড়া ফেরিওয়ালা মজনু এবার ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী” শিরোনামে নবধারা তে মজনু মোল্লার নামে একটি সংবাদ প্রচারিত হয়।
সেখানে মজনু মোল্লা বলেছিলেন, আমি গরীব মানুষ, সারা জীবনে অনেক না খেয়ে থেকেছি। আমি চেয়ারম্যান হলে গরীবের মাল বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেবো। কোন প্রকার লুটপাট দুর্নীতি করবো না। চেয়ারম্যান এর কাজ করবার পাশাপাশি আমি সিঙ্গাড়া বিক্রি করে যাবো। আমি মুজিব ভক্ত মানুষ। জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়ন ও সোনার বাংলা গড়তে আমি কাজ করবো।
বঙ্গবন্ধুর কথা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা হ্যান্ডমাইক দিয়ে গান গেয়ে গেয়ে প্রচার করে তিনি সিঙ্গাড়া বিক্রি করতেন। সরকারের প্রদেয় সুযোগ সুবিধা তিনি গরীব সাধারণ জনগণের হাতে তুলে দেওয়ার জন্যই প্রার্থী হওয়ার আশা ব্যক্ত করেছিলেন।
নবম শ্রেনীতে পড়ার সময় অর্থাভাবে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। তারপর হতেই বঙ্গবন্ধুর হত্যার করুণ কাহিনী গানের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরে সিঙ্গাড়া বিক্রি করতেন। এসব গানের কথা তিনি নিজেই লিখে নিজের কন্ঠে গাইতেন।
আজ যোহর বাদ নিলফার ধোপার মাঠে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। মোঃ মজনু মোল্লা নিলফা গ্রামের মৃত মোঃ রুস্তম মোল্লার পুত্র। মৃত্যুকালে মজনু মোল্লা স্ত্রী ৩ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তান সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।