কোটালীপাড়া প্রতিনিধিঃ
গত শনিবার (৩জুলাই) ভারতের কোলকাতার হরিদেবপুর থেকে নিষিদ্ধ সংগঠন জামাতুল মুজাহিদী বাংলাদেশ (জেএমবি) সংগঠনের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত রবিউল ইসলাম ও সাব্বির ওরফে মিকাইলের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রামে। রবিউল ইসলামের পিতার নাম ইলিয়াছ খান ও সাব্বির ওরফে মিকাইলের পিতার নাম মোসলেম খান। অপরদিকে নাজিউর রহমান ওরফে পাভেলের বাড়ি টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী গ্রামে।
এই ৩জন গ্রেপ্তারের পর কোলকাতার সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে সেলিম মুন্সির নাম। ওই ৩ জঙ্গিকে গ্রেপ্তারের সময় অপর জেএমবি সদস্য সেলিম মুন্সি পালিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে কোলকাতারবেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম।
সেলিম মুন্সি (৪৫) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রামের মৃত সুরাত মুন্সির ছেলে। সে বিগত ২০ বছর ধরে কোলকাতার সোদপুরে ব্যবসা করছেন। সেলিমের বড় ভাই হালিম মুন্সিও কোলকাতায় থাকেন বলে জানিয়েছেন হিরণ গ্রামে বসবাসরত সেলিম মুন্সির স্ত্রী শাহিনুর বেগম। তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার (৮জুলাই) তার স্বামী সেলিম মুন্সি কোলকাতা থেকে বাড়িতে এসেছেন।
তবে গতকাল মঙ্গলবার সকালে সেলিম মুন্সির বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে জেএমবি সদস্য রবিউল ইসলাম, সাব্বির ওরফে মিকাইলম ও নাজিউর রহমান ওরফে পাভেল গ্রেপ্তারের পরে সেলিম মুন্সি বাংলাদেশে পালিয়ে এসে গা ঢাকা দিয়েছেন।
এদিকে ভারতের কোলকাতার সংবাদ মাধ্যমে ৩ জেএমবি সদস্য গ্রেপ্তার ও সেলিম মুন্সিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেলিম মুন্সিকে খুঁজতে আইনশৃঙ্খলার বিভিন্ন বাহিনী তৎপর রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে। তবে রবিউল ইসলাম, সাব্বির ওরফে মিকাইল ও সেলিম মুন্সির সাথে জঙ্গি সম্পৃক্ততার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন এলাকাবাসী ও তাদের পরিবার।
হিরণ গ্রামের তুহিন মুন্সি বলেন, সেলিম মুন্সি, রবিউল ইসলাম ও সাব্বির ওরফে মিকাইল এলাকায় ভালো লোক বলে পরিচিত। এরা কোন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেনি। আমার জানামতে জঙ্গিদের সাথে এদের কোন সম্পর্ক নেই। এরা সকলেই খেটে খাওয়া মানুষ। সংসার চালাতে এরা কোলকাতায় ছাতা মেরামতের কাজে করতে গিয়েছিল।
রবিউল ইসলামের পিতা ইলিয়াছ খান বলেন, পাশের গ্রামের একটি মেয়ের সাথে আমার ছেলে রবিউলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ৬মাস আগে ওই মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে আমার ছেলের নামে একটি মামলা দেওয়া হয়। এই মামলার পরে আমার ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। গত ৬মাস ধরে আমার ছেলে পলাতক রয়েছে। সেই সময় থেকে আমার সাথে তার কোন যোগাযোগ নেই।
সেলিম মুন্সির স্ত্রী শাহিনুর বেগম নবধারা কে বলেন, ২০ বছর ধরে আমার স্বামী কোলকাতায় থাকেন। তবে সে মাঝে মাঝে বাড়িতে আসতো। প্রথমে কোলকাতায় গিয়ে ছাতা মেরামতের কাজ শুরু করেন। তারপর এদেশ থেকে সে লোক নিয়ে তাদের দিয়ে ছাতা মেরামতের ব্যবসা করতেন। আমাদের গ্রামের রবিউল ইসলাম ও মিকাইল এবং টুঙ্গিপাড়ার নাজিউর আমার স্বামীর কাছে কাজ করতো বলে শুনেছি। এরা সকলেই পেটের দায়ে কাজ করতে কোলকাতা গেছে । এদের বিরুদ্ধে যে জঙ্গির অভিযোগ উঠেছে সেটি আমার মনে হয় সম্পূর্ণ মিথ্যা। গত বৃহস্পতিবার আমার স্বামী বাড়িতে এসেছেন।
তিনি আরও জানান গত সোমবার বিকেলে সে আমাদের এক আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছেন। তবে কোথায় গিয়েছেন তাহা সাংবাদিকদের জানায়নি সেলিম মুন্সির স্ত্রী শাহিনুর বেগম।
এ ব্যাপারে কোটালীপাড়া থানার ওসি মোঃ আমিনুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি।