মুক্ত কলামঃ
হে ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ। বাঙালির রাখাল রাজা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। বাংলাদেশের ভাটির অঞ্চল টুঙ্গিপাড়াতে ১৭ই মার্চ ১৯২০ সালের রজনীর প্রথম প্রহরে রুদ্রের বেশে এসেছিলেন পিতা।
শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের হাজারো লড়াই সংগ্রামের পথ ধরে ২৫ মার্চের কালরাত শেষে ২৬ মার্চের মধ্য রজনীতে দিয়েছিলেন স্বাধীনতার ডাক। তাঁর তেজ্যদীপ্ত আহ্বানে অকুতোভয় বীর বাঙালি মুখ্যত মুক্তিযোদ্ধারা ঝাপিয়ে পড়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে। ছিনিয়ে এনেছিল বিজয়, মহান বিজয় দিবস ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল।
২৬ মার্চে গভীর রাতে এহিয়া-টিক্কা-ভূট্টো গঙেরা পিতাকে কারারুদ্ধ করে, প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের মাটি থেকে পাকিস্তানের দুর্ভেদ্য মিয়ানওয়ালী কারাগারে। কারা প্রকোষ্ঠের মাঝে চলতে থাকে দুঃসহ যন্ত্রণা। দেশ বিজয়ের শেষে সাজানো কোর্টমার্শাল করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হয়। কিন্তু তাতেও হিমালয় সদৃশ পিতাকে টলানো যাই নি এতোটুকুও। কারণ যে মানুষ দেশ মাতৃকার জন্য নিজেই মরণে প্রস্তুত তাঁকে কেউ মারতে পারে না। তাই পিতা মৃত্যুর সে শেকল ভেঙ্গে ৮জানুয়ারি ১৯৭২সালে বেড়িয়ে আসেন মুক্ত আকাশে।
পাকিস্তানের লৌহ কারাগারের দুর্ভেদ্য গরাদ ভেঙ্গে রাত দুটোয় পাক বিমানে চেপে ছুটে চলেন ইংল্যান্ডের দিকে। ৯ জানুয়ারি ১৯৭২সাল সকাল ৬ টা ৩৮মিনিটে পাকিস্তানি বিমানটি অবতরণ করে হিথরো বিমানবন্দরে। সেখান থেকে ভারতের মাটি হয়ে রুদ্রের বেশে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ফিরে আসেন পিতা ততকালীন পুরানা বিমানবন্দরে। এরপর বিমানবন্দর থেকে বেড়িয়ে লাখো মানুষের স্পর্শ নিতে নিতে পৌঁছে যান ঢাকার ঘোড়দৌঁড় ময়দানে যা এখন রেসকোর্স ময়দান বলেই পরিচিত। রেসকোর্স ময়দানে পা রেখেই বাংলার মাটি চুম্বন করে আনন্দাশ্রুতে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেছিলেন জাতির পিতা। এ কথায় বলা যায়” পিতা বিজয়ীর বেশে, স্বদেশের মাটিতে এসে, আনন্দাশ্রুতে উঠেছিলেন হেসে।” সেদিন পিতা প্রত্যক্ষে অবকলোকন করেছিলেন, ক্ষতবিক্ষত দেশ।
যে দেশে সোনার বাংলা গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে মানবতার মা জননী নিরন্ত উন্নয়নের কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। আমার দৃঢ় প্রত্যয় ও একান্ত প্রত্যাশা দেশরত্ন মানবতার মা জননী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সোনার হাতে তাঁরই পিতার নামে টুঙ্গিপাড়া ধামে গড়ে তুলবেন অত্যাধুনিক ও অত্যাবশকীয় মহানগরী “বঙ্গবন্ধু সিটি”।
ডাঃ সিদ্ধেশ্বর মজুমদার
সভাপতি, রাইটার্স ক্লাব, গোপালগঞ্জ।
(আমার প্রামাণ্য গ্রন্থ “হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ”-এর আলোকে লেখা।)