তাপস কুমার মজুমদার, স্টাফ রিপোর্টার, ভোলা
ভোলায় ইলিশের ভরা প্রজনন ও ডিম ছাড়া নিশ্চিত করতে ২২ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর।
এ সময় মাছ ধরতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত নিবন্ধিত এক লাখ ৪৩ হাজার ৪৩৮ জেলে পরিবারের জন্য সরকারের তরফ থেকে ২৫ কেজি হারে তিন হাজার ৫৮৫ দশমিক ৯৫০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হলেও এই তালিকায় নেই বেঁদে ও মান্তা জেলেরা। এদিকে ২২ দিন জাল ফেলতে বা বড়শিতে মাছ ধরতে পারবেন না বেঁদে ও মান্তা সম্প্রদায়ের জেলেরাও। পরিবার পরিজনের মুখে ভাতের জোগান দিতে বাধ্য হয়ে অনেকে এলাকা ছাড়ছেন।
জেলা সদরের রাজাপুর জোড়খালে রয়েছে দেড় শতাধিক মান্তা সম্প্রদায়। শনিবার দুপুরে বেশ কিছু পরিবারকে নৌকা নিয়ে এলাকা ছাড়তে দেখা গেছে।অনেকেই জানান ক্ষোভের কথা।
সোহেল সরদার, রাকিব সরদার, জুয়েলের পরিবারকে এক জোটে চলে যেতে দেখা যায়। মান্তা সম্প্রদায়ের সিনিয়র সর্দার আদাই সর্দার, আব্দুর রহমান সর্দার জানান, তারা ভোলার জোড়খাল এলাকায় ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে তাদের সম্প্রদায়ের জেলেরা নৌকায় বসবাস করছেন। একমাত্র পেশা নদীতে ছোট জালে মাছ ধরা। অথচ তাদের জেলে নিবন্ধনের আওতায় আনা হয়নি। যে কারণে তারা মাছ ধরা বন্ধকালীন সরকারের নির্ধারিত কোনো সুবিধা পান না। এক মাস আগে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুজ্জামান তাদের শুকনো খাবারের খাদ্য সহায়তা দেন।
কিন্তু এবার কোনো সহায়তা বা চাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার। নুরু সর্দারের ছেলে মিরাজ জানান, ভোলার জোড়খালই এখন তাদের পরিচয়। কেন তারা সরকারি সুবিধা পাবেন না? ছালাউদ্দিন মাতাব্বরের স্ত্রী সালেহা বিবি জানান, তাদের চার সন্তান রয়েছে। আছেন বৃদ্ধ শ্বশুরও। ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকলে ওই সময় তারা কী করে সংসার চালাবেন।
জানা যায়, নিবন্ধিত জেলেরা জাটকা সংরক্ষণ প্রকল্প থেকে চার মাস ৪০ কেজি হারে ১৬০ কেজি চাল ও ইলিশ প্রজনন মৌসুমের ২২ দিনের জন্য ২৫ কেজি চাল হারে চাল পাচ্ছেন। নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে ভোলা সদরের ২০ হাজার ৩৯৮ পরিবার পাচ্ছে ৫০৯ দশমিক ৯৫০ টন চাল, দৌলতখান উপজেলার ২১ হাজার পরিবার পাচ্ছে ৫২৫ টন, বোরহানউদ্দিনের ১৯ হাজার ৩৫০ পরিবারের জন্য ৪৮৩ দশমিক ৭৫০ টন, তজুমদ্দিন উপজেলার ১৮ হাজার ৭১৫ পরিবারের জন্য ৪৬৭ দশমিক ৮৭৫ টন, লালমোহন উপজেলার ১৭ হাজার ১৮৬ পরিবারের জন্য ৪২৯ দশমিক ৬৫০ টন, চরফ্যাশন উপজেলার ৩৫ হাজার ৩৮৬ পরিবারের জন্য ৮৮৪ দশমিক ৬৫০ টন চাল ও মনপুরা উপজেলার ১১ হাজার ৪০৩ পরিবার পাচ্ছে ২৮৫ দশমিক ৭৫ টন চাল। ১২ অক্টোবরের মধ্যে চাল উত্তোলন করে জেলেদের মধ্যে বিতরণ করার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হোসাইন জানান, এবারই প্রথম জেলার নিবন্ধিত সব জেলে সরকারি খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন। বঞ্চিত বেঁদে বা মান্তা সম্প্রদায়কে নিবন্ধনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইউএনও আরিফুজ্জামান জানান, জেলা সদরে মানতা ও বেঁদে জেলে পরিবার রয়েছে ২৫০টি। নিবন্ধন না থাকায় এদের কোনো সরকারি সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.