মোঃ ইব্রাহীম মিঞা, দিনাজপুর প্রতিনিধি
টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে টিকা দেব দল বেঁধে’— এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যায় দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় শনিবার (১২ অক্টোবর) টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উদ্বোধন করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজ নাজিয়া নওরীন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শমসের আলী মণ্ডল, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুনা লায়লা, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী, একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুস সালাম, বিরামপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম এবং মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুলতান হোসেনসহ অনেকে। সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)-এর আওতায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশু এবং প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এক ডোজ ইনজেকটেবল টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে।
টিকা বিনামূল্যে প্রদান করা হলেও, জন্ম নিবন্ধনের ১৭-সংখ্যার নম্বর দিয়ে অনলাইন নিবন্ধন বাধ্যতামূলক ছিল। বিরামপুর উপজেলায় টিকাদান ক্যাম্পেইনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৭ হাজার ৭০০ জন, কিন্তু উদ্বোধনের দিন পর্যন্ত নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ১৮ হাজার ৫০০ জনের, যা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম। পৌরসভা এলাকায় লক্ষ্যমাত্রা ১৫ হাজার ৬৮৩ জনের মধ্যে নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৬ হাজার ৪২৩ জন (৪১%), আর উপজেলার অন্যান্য এলাকায় ৩২ হাজার ১৯২ জনের মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে ১২ হাজার ৭১৩ জন (৩৯%)। নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় নানা ভোগান্তির অভিযোগ উঠেছে। অনেক শিক্ষার্থী জন্ম নিবন্ধন না থাকায় নিবন্ধন করতে পারেননি। পৌরসভায় পৌরকর পরিশোধ না থাকলে জন্মসনদ না দেয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিপাকে পড়েছেন একি অবস্থা ইউনিয়ন পর্যায়েও। তাছাড়া কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধনের জন্য অর্থ আদায়ের অভিযোগও পাওয়া গেছে—কোথাও ১০, কোথাও ২০, আবার কোথাও ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুনা লায়লা বলেন, টিকা কার্ডের প্রিন্টিং খরচের জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান সামান্য অর্থ নিতে পারে, তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়। একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুস সালাম বলেন, নিবন্ধন করার দায়িত্ব শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের। কেউ যদি টাকা নিয়ে থাকে, তা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান জানান, নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় কিছু সমস্যার কথা আমরা জেনেছি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট শিক্ষা দপ্তরকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো টাইফয়েড প্রতিরোধে এ ধরনের বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে সারাদেশে ১ কোটি ৬৮ লাখ শিশু টিকার জন্য নিবন্ধন করেছে। মাসব্যাপী এই কর্মসূচি চলবে ১৩ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুমোদিত এই টিকা বাংলাদেশ সরকার ‘গ্যাভি’-এর সহায়তায় পেয়েছে। সারাদেশে প্রায় ৫ কোটি শিশুকে এক ডোজ করে টিকা দেওয়া হবে। সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ টিকাদান কর্মসূচিকে সফল করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করার বিকল্প নেই।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.