কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের পাঁচগাতিয়া গ্রামে আলহাজ্ব এম এ মান্নান মহিলা দাখিল মাদরাসার সুপারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে মাদরাসার সামনে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মাদরাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার এম এ মান্নানসহ স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী। বক্তারা অভিযোগ করেন, সুপার গোলাম মোস্তফাকে ১১ বছর আগে ১১টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি প্রাথমিক বহিষ্কারাদেশ জারি করে এবং ২০১৭ সালে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।
বক্তারা বলেন, তৎকালীন সময়ে শিক্ষকরা সুপার গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে কমিটির কাছে লিখিত আবেদন জমা দেন। এরপর থেকে তিনি প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি স্থানীয় জামায়াতপন্থী কিছু ব্যক্তির সহযোগিতায় বহিষ্কৃত সুপার জোরপূর্বক মাদরাসায় প্রবেশ করেন, যা অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার এম এ মান্নান বলেন, “১৯৯৮ সালে আমি নিজের জায়গায়, নিজ খরচে এই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করি এবং ১২ বছর নিজে পরিচালনা করি। ২০১০ সালে আমার প্রচেষ্টায় এটি এমপিওভুক্ত হয়। বহিষ্কৃত সুপার গোলাম মোস্তফা বর্তমানে আদালতে মামলা করলেও ১১ বছর ধরে তিনি মাদরাসায় অনুপস্থিত ছিলেন। সরকার পরিবর্তনের পর হঠাৎ করে তিনি জামায়াতের লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক প্রবেশ করেছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি আরও বলেন, “এই মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এলাকার মেয়েদের শিক্ষা বিস্তারের জন্য। আমরা চাই না এখানে কোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হোক। বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে নতুন কাউকে সুপার হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।”
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, নিয়মিত উপস্থিত না থাকা, অভিভাবকদের কাছ থেকে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা গ্রহণসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তারা বলেন, “একজন বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত ব্যক্তিকে সুপার হিসেবে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। প্রয়োজনে বড় ধরনের আন্দোলনে নামা হবে।”
স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, সুপারের যোগদান নিয়ে এলাকায় বড় ধরনের সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে। তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।