গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে একটি কারখানার বিরুদ্ধে মানববন্ধনে অংশ নিতে স্কুল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে উপজেলা চত্ত্বরে শতাধিক শিক্ষার্থীকে দাঁড় করানোর অভিযোগ উঠেছে একটি মহলের বিরুদ্ধে।
রোববার (১২ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে উপজেলা চত্ত্বরে শিক্ষার্থীদের দিয়ে এ মানববন্ধন করানো হয়।
ক্লাস চলাকালীন সময় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ইজিবাইক ভাড়া করে নিয়ে মানববন্ধনে দাঁড় করায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার খাগড়াবাড়িয়া এলাকায় এমএস মেটাল নামে একটি কারখানা বন্ধের দাবিতে কাশিয়ানী উপজেলা চত্ত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। মানববন্ধনে পারুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ থেকে ডেকে এনে স্কুল ড্রেস পরা অবস্থায় মানববন্ধনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করানো হয়। প্রদর্শনের জন্য তাদের প্রত্যেকের হাতে ব্যানার-প্লেকার্ড ধরিয়ে দেওয়া হয়। ব্যানারে পারুলিয়া, মাহমুদপুর, ওড়াকান্দি, সাজাইল ইউনিয়নবাসীর প্রতিবাদ লেখা থাকলেও; সেখানে এলাকাবাসীর উপস্থিত ছিল খুবই কম। তবে পারুলিয়া ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিয়েছেন পারুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের ছোট ভাই তরিকুল ইসলাম।
অভিভাবকদের অভিযোগ, চারটি ইউনিয়নের ব্যানার ব্যবহার করে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করানো হল কেন? এর পেছনে স্থানীয় রাজনীতি বা স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধন রয়েছে বলে তাদের ধারণা।
একাধিক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার মূল্যবান সময় এভাবে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ অনৈতিক। ক্লাস চলাকালীন তাদের দিয়ে এমন কাজ করানো শিক্ষানীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন।’
পারুলিয়া ইউনিয়নের নেতৃত্ব দেওয়া তরিকুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় মানববন্ধনে গিয়েছে। তবে ইজিবাইক ভাড়া করার বিষয় কোন সদুত্তর দেননি তিনি।’
শিক্ষার্থীদের ক্লাস থেকে বের করে আনার বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকান্ত চন্দ্র বিশ্বস বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ১০ টার সময় স্কুলে এসে ক্লাস করেছে। পরে তারা কার ইন্ধনে ক্লাস থেকে বেরিয়ে কাশিয়ানী উপজেলা সদরে গিয়ে মানববন্ধন করেছে, সেটা আমার জানা নেই।’
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজা বেগম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করানোর কোন নিয়ম বা অনুমতি নেই। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে এমন কাজ করানো অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ। তবে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মানববন্ধনের বিষয়ে এমএস মেটাল ইন্ডাস্ট্রি এর পরিচালক (অর্থ) মিজানুর রহমান বলেন, ব্যাটারি এবং ব্যাটারির যন্ত্রাংশ তৈরিতে ধোঁয়া ও বর্জ্য পরিশোধনে আমাদের কয়েক স্তরে উন্নত পরিশোধন ব্যবস্থা রয়েছে। কারখানা থেকে যে ধোঁয়া নির্গত হয়, তা অত্যাধুনিক মেশিনে বিশুদ্ধ করা হয়। অত্যাধুনিক এয়ার ট্রিট প্লান্ট এটিপি এবং ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ইটিপি ব্যবস্থা রয়েছে। একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
মিজানুর রহমান আরো বলেন, এমএস মেটাল ইন্ডাস্ট্রি এর এক ফোটা পানিও কারখানার বাইরে ফেলা হয়না, আর নদী বা খালে ফেলার তো প্রশ্নই ওঠে না। আমরা চীনের তৈরি অত্যাধুনিক মেশিন ব্যবহার করি। চীনের ইঞ্জিনিয়াররা সেগুলো পরিচালনা করেন। পরিবেশের ব্যাপারে আমরা সচেতন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.