আবিদ হাসান, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫, সরকার ঘোষিত ৪ অক্টোবর হতে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ,ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন,মজুদ,বাজারজাতকরণ ও বিনিময় নিষিদ্ধ হলেও মানতে নারাজ মানিকগঞ্জের হরিরামপুর পদ্মানদীর জেলেরা। হিংস্র আর হায়নারুপে পদ্মানদীতে আইনের তোয়াক্বা না করেই প্রতিদিন বীরদর্পণে দিনে রাতে চলছে পদ্মানদীর ইলিশ লুট।
গত কয়েকদিনে সরেজমিনে, প্রতিদিন বিকেল ও সন্ধারপর উপজেলার হাতিঘাটা,কাঞ্চনপুর,কালিতলা,লেছড়াগঞ্জ,হরিণাঘাট,সেলিমপুরসহ পদ্মানদীতে জেলেদের ঐক্যবদ্ধ তান্ডবে মা ইলিশের অকাল প্রয়ানে হতবাক স্থানীয়রা। এই ইলিশ হাতিঘাটা বাজারে একটা নির্দিষ্ট সময়ে ৮০০/১০০০ টাকা করে প্রতি কেজি প্রকাশ্যে বিক্রিও করছে নিয়মিত। হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য অফিস কতৃক প্রতিদিন দিনে রাতে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে হিমশিম খাচ্ছে। জেল,জরিমানায়ও থামছে ছোট,বড়, মা ইলিশ নিধন।
এমনকি, অভিযান চলাকালীন সময়ে গত ১১ অক্টোবর দুপুরে, উপজেলার কাঞ্চনপুর এলাকায় জেলেরা এক হয়ে হরিরামপুর মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা,কর্মচারীদের উপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। হামলার পর পরই আবারও জোরালো পাল্টা অভিযানে বেশ কয়েকজন জেলেকে জাল,মাছসহ আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতে জেল দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে ফরিদপুর,গোয়ালন্দ,শিবালয়,রাজবাড়ির জেলেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশিয় অস্ত্রসস্ত্রসহ ইলিশ নিধনে একযোগে পদ্মায় নামে।
রামকৃষ্ণপুর ইউপি বাসিন্দা মোঃ ইউসুব বলেন, আন্ধারমানিক ঘাট দিয়ে মৎস্য অফিসাররা দিনে রাতে অভিযান করে দেখেছি। তাদের কঠোর চেষ্টায় থামছে না জেলেদের তান্ডব। নিয়মিত হাতিঘাটা বাজারে বিকেলে অথবা সন্ধ্যায় গেলে ছোট,মাঝারি সাইজের ইলিশ কিনতে পাওয়া শুনেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেলিমপুর গ্রামের এক জেলে আক্ষেপ করে জানান, ২২ দিন কি আমরা চুরি খামু.?
আমগো চাইল ও দ্যায়নাই কেও। জেল, জরিমানা স্বীকার করেই পদ্মায় নামছি। কিছু করার নাই। পেটের ক্ষিদ্যা তো আর অফিসারেরা মিটাইতে আইবো না।
হরিরামপুর উপজেলা ইলিশ প্রকল্পের ক্ষেত্র-সহকারী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমরা প্রতিদিন জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় জীবনের ঝুকি নিয়ে দিনে রাতে পদ্মায় অভিযান করছি নিয়মিত। আমাদের উপর বেশ কয়েকবার হামলা হলেও আমরাও ছারতে নারাজ। ইলিশ সম্পদ রক্ষায় যা যা প্রয়োজন, তাই আমরা করবো। আরও কঠোর অভিযানে জেলা,উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মহোদয়ের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্ততি নিচ্ছি। আমাদের জাতীয় সম্পদ- ইলিশ রক্ষায় সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নুরুল হক ইকরাম জানান, জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় আমরা অন্যায়ের সাথে কখনোই আপোষ করিনি। জেলেরা অপরাধ করবেই, তারপরেও আমরা কোন ছাড় দেইনি। আমাদের অভিযান নিয়মিত চলছে,চলবে।
উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য বলছে- গত কয়েকদিনে ২৩টি অভিযান পরিচালনা করে ১ লক্ষ ৫৪ হাজার লক্ষ মিটার ধ্বংস করা হয়েছে। যাহার আনুমানিক বাজার মুল্য প্রায় সাড়ে ষোল লক্ষ টাকা। ৭টি মোবাইল কোর্ট, ১৭ টি নিয়মিত মামলা, ৫২ হাজার টাকা জরিমানা, ৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা আর ৫৪ মণ ছোট,মাঝারি,বড় সাইজের ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন এতিমখানায় দেয়া হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.