Nabadhara
ঢাকামঙ্গলবার , ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস
  5. কৃষি
  6. খুলনা বিভাগ
  7. খেলাধুলা
  8. চট্টগ্রাম বিভাগ
  9. জাতীয়
  10. জেলার সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. প্রধান সংবাদ
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খুলনায় বিএনপি সভাপতির প্রচারণায় বহিষ্কৃতদের উপস্থিতি, ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতারা

খুলনা প্রতিনিধি
অক্টোবর ১৪, ২০২৫ ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

খুলনা প্রতিনিধি

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অস্ত্র মামলা ও অপহরণের মতো গুরুতর অভিযোগে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতাদের দেখা যাচ্ছে খুলনা মহানগর বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনার নির্বাচনী প্রচারণায়। এতে ক্ষোভে ফুঁসছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, যাদের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে, তারাই এখন সভাপতির পাশে দাঁড়িয়ে জনসংযোগ করছেন— এটি দলের জন্য চরম লজ্জাজনক।

গত ২০ জুন রাতে খুলনার টুটপাড়া এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলবার, একটি শর্টগান ও বিপুল পরিমাণ গুলিসহ ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সালাউদ্দিন মোল্লা বুলবুল এবং ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়। পরে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ২৩ জুন সালাউদ্দিন মোল্লাকে অব্যাহতি ও তৌহিদুর রহমানকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

তবে সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা আবারও রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় হয়েছেন। গত রোববার (১২ অক্টোবর) খুলনা মহানগর বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনার নির্বাচনী জনসংযোগে অংশ নিতে দেখা গেছে বহিষ্কৃত নেতা সালাউদ্দিন মোল্লা বুলবুলকে।

এদিকে, গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী নুর আলমকে অপহরণের অভিযোগে গত ২২ মার্চ রাতে খুলনা মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু, জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা ইমন মোল্লাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় ২৩ মার্চ পিয়ারুকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু রোববার ও সোমবার মনার জনসংযোগে বহিষ্কৃত মাহাবুব হাসান পিয়ারুকেও অংশ নিতে দেখা গেছে।

দলীয় সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের একাংশ বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় বিএনপি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে খুলনায় শুদ্ধি অভিযান শুরু করে। তখন প্রায় তিন ডজন নেতাকে বহিষ্কার ও শতাধিক নেতাকে শোকজ করা হয়। বিলুপ্ত করা হয় মহানগর ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং খুলনা জেলা বিএনপির কমিটি।

তবুও শৃঙ্খলা ফেরেনি। বরং দেখা যাচ্ছে, বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত অনেক নেতাই এখন খুলনা মহানগর বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনার নির্বাচনী প্রচারণায় সরব ভূমিকা পালন করছেন।

গত ১০ অক্টোবর থেকে খুলনা-২ আসনে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামেন এস এম শফিকুল আলম মনা। প্রতিদিনই তিনি নগরীতে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করছেন। গত রোববার তার সঙ্গেই দেখা গেছে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি মাহবুব উল্লাহ শামীমকে। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতা জেড এ মাহমুদ ডনের পক্ষে কাজ করার অভিযোগে মাহবুব উল্লাহ শামীমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। বহিষ্কারের সময় দলের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়— তার সঙ্গে কোনো নেতাকর্মী যেন যোগাযোগ না রাখেন। অথচ এখন তিনি নিয়মিতই সভাপতির পাশে থেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

একইভাবে, সাধারণ মানুষের বাড়িতে হামলা ও চাপ প্রয়োগের অভিযোগে বহিষ্কৃত ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য খায়রুল ইসলাম হিরু এবং খুলনা সিটি করপোরেশনের লিনিয়ার পার্কের জমি দখল ও দোকান তৈরির অভিযোগে আলোচিত স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি একরামুল হক হেলালকেও দেখা গেছে সভাপতি মনার জনসংযোগে।

দলের অভ্যন্তরীণ নেতাকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে বিএনপির ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। খুলনা মহানগর বিএনপির এক সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে দল কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে, এখন তারাই সভাপতির পাশে দাঁড়িয়ে প্রচারণা করছে— এতে সাধারণ কর্মীরা বিভ্রান্ত ও হতাশ। এতে দলের শৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়ছে।”

৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির এক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বহিষ্কৃতরা যদি সভাপতির সঙ্গে প্রচারণায় নামতে পারে, তাহলে দলীয় সিদ্ধান্তের মূল্য কোথায়? এতে দলের ভেতর শৃঙ্খলার কোনো অস্তিত্বই থাকছে না।”

এ বিষয়ে খুলনা মহানগর বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা বলেন, “আমি কোনো বহিষ্কৃত নেতাকে সঙ্গে নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি না। যদি কেউ নিজে থেকে এসে উপস্থিত হয়, তাহলে তার দায়ভার তার নিজের। দলের নির্দেশনা আমি কঠোরভাবে মেনে চলি।”

তবে দলের অনেক সিনিয়র নেতার মতে, সভাপতির ছত্রছায়া না থাকলে বহিষ্কৃতরা এতটা সক্রিয় হতে পারতেন না। খুলনা মহানগর বিএনপির আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা, অপহরণ ও দখলবাজির অভিযোগ রয়েছে, তাদের সঙ্গে সভাপতির জনসংযোগে অংশ নেওয়া শুধু দলের জন্য নয়, বরং জনগণের কাছেও নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খুলনা বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, স্বজনপ্রীতি ও শৃঙ্খলাহীনতা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত নেতাদের পুনরায় মাঠে নিয়ে আসা খুলনা বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তিকে আরও দুর্বল করে দিচ্ছে বলে তারা মন্তব্য করেছেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।