রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার কুখ্যাত সন্ত্রাসী রিপন শেখ ওরফে কনডম রিপন গ্রেপ্তারের পর এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে, তবে তার সহযোগীরা এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে রিপনের এক সহযোগী অস্ত্রসহ পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত ৬ অক্টোবর রাতে দিঘলিয়ার ফরমাইশখানা গ্রামে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ও যৌথবাহিনী হত্যাসহ ১১ মামলার আসামি রিপন শেখকে (৩৫) একটি পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করে। তিনি ওই গ্রামের আনসার শেখের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রিপনের কাছে থাকা বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও তার গডফাদারদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অস্ত্রভান্ডার এখনও উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তার সহযোগীরা এলাকায় চাঁদাবাজি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
ফরমাইশখানা এলাকার দোকান মালিক মফিজুল ইসলাম বলেন, “রিপন ধরা পড়েছে শুনে আমরা ভেবেছিলাম এখন শান্তিতে থাকব। কিন্তু তার সহযোগীরা এখন উল্টো আরও বেশি চাঁদা দাবি করছে। তাদের ভয়ে অনেকেই দোকান বন্ধ রেখে বসে আছেন।”
এলাকার অপর এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “রিপনদের দাপটে দীর্ঘদিন আমরা ভয়ে ছিলাম। এখন রিপন জেলে, কিন্তু যারা তাকে চালাতো, তারা এখনও বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের ধরছে না কেন, আমরা বুঝি না।”
পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের সময় যৌথবাহিনী রিপনের অবস্থান করা বাড়িটি ঘিরে ফেললে তার এক সহযোগী বোরকা পরে অস্ত্রসহ পালিয়ে যায়। ওই সহযোগীর কাছেই অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কনডম রিপনকে ব্যবহার করে একটি মহল এলাকায় মাদক বাণিজ্য, ডাকাতি ও চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছিল। রিপনের গ্রেপ্তারের পরও তারা সক্রিয় থেকে চাঁদাবাজির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে জনমনে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
রিপনের বিরুদ্ধে দিঘলিয়া থানায় হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ অন্তত ১১টি মামলা রয়েছে।
এই বিষয়ে দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাহীন বলেন, “রিপনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন। তাই রিমান্ডের আবেদন করা হয়নি।”
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, রিপনের স্বীকারোক্তি সত্ত্বেও তার কাছ থেকে অস্ত্রভান্ডারের অবস্থান জানা যায়নি এবং পুলিশও এ বিষয়ে তেমন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। এ কারণে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের মাঝে।
এলাকাবাসীর দাবি, কনডম রিপনের গডফাদার ও সহযোগীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দিঘলিয়া উপজেলাকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে হবে। নইলে রিপনের শেকড় থেকে গজানো এই নেটওয়ার্ক আবারও এলাকায় অশান্তি ফিরিয়ে আনবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.