হুমায়ুন কবির মিরাজ, বেনাপোল
যশোরের শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলায় তিন দিনের ব্যবধানে দুই ভ্যানচালক হত্যার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে সীমান্তাঞ্চল। নিহতদের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১২টায় শার্শা উপজেলা পরিষদের সামনে ও নাভারণ সাতক্ষীরা মোড়ে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় ভ্যান ও রিকশাচালকরা।
কর্মসূচিতে শার্শা, নাভারণ ও বেনাপোল এলাকার শতাধিক ভ্যান–রিকশাচালক অংশ নেন। এক পর্যায়ে তারা যশোর–বেনাপোল মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় আধাঘণ্টা অবস্থান নেন। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় এবং বেনাপোল বন্দরের দিকে পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল ব্যাহত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,
“প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও আমাদের ভাইদের গুম, খুন বা ছিনতাই করা হচ্ছে। আমরা ভ্যান চালিয়ে কষ্টে সংসার চালাই। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো।”
নিহত ভ্যানচালক মাসুদ রানার বাবা চোখ মুছতে মুছতে বলেন,
“আমার ছেলেটা ভ্যান চালিয়ে দুইটা বাচ্চার মুখে ভাত তুলে দিতো। এখন সেই ছেলেটার লাশই আমার বুকে ঠাঁই নিয়েছে। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই — যাতে আর কোনো বাবার বুক এভাবে খালি না হয়।”
বক্তারা আরও বলেন, মেহনতি মানুষের জীবন যেন নিরাপদ হয় — এটাই এখন একমাত্র দাবি। “আমরা কাজ করে খেতে চাই, মরতে নয়।”
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে ঝিকরগাছা উপজেলার বায়সা ও আশিংড়ী গ্রামের মাঝামাঝি একটি নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে নিখোঁজ ভ্যানচালক মাসুদ রানার (২১) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি শার্শা উপজেলার উলাশী গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
এর দুই দিন পর, মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকালে শার্শা উপজেলার কাজিরবেড় গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির স্টিলের বাক্স থেকে উদ্ধার করা হয় আরেক ভ্যানচালক আব্দুল্লাহর (২৫) অর্ধগলিত মরদেহ।
পরপর দুই চালক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সীমান্তাঞ্চলে নেমে এসেছে শোক ও আতঙ্কের ছায়া। এলাকাবাসী দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।