Nabadhara
ঢাকাশুক্রবার , ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস
  5. কৃষি
  6. খুলনা বিভাগ
  7. খেলাধুলা
  8. চট্টগ্রাম বিভাগ
  9. জাতীয়
  10. জেলার সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. প্রধান সংবাদ
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খুলনার ঘেরের বেড়িতে সৌদি আরবের ফল সাম্মাম চাষ করে কৃষকরা লাভবান

রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
অক্টোবর ২৪, ২০২৫ ৩:৪৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি

খুলনার তেরখাদা, রূপসা, ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা উপজেলার বিস্তীর্ণ বিলজুড়ে চোখ রাখলেই চোখে পড়ে শুধু জলাশয় নয়, বরং চারপাশ ভরে আছে সবুজের সমাহার। প্রতিটি ঘেরের বেড়ি যেন এক প্রাকৃতিক বাগান, যেখানে মাছের সঙ্গে ফল ও সবজির চাষ হচ্ছে। এবছর সেই সবুজ সমাহারে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বিদেশি সৌদি আরবের সুস্বাদু ফল সাম্মাম, যা চাষিদের জন্য নতুন আয়ের উৎস এবং সম্মান চাষে সাফল্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

রূপসা উপজেলার আনন্দনগরের চাষি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন প্রথমবারের মতো পাঁচ বিঘার ঘেরের বেড়িতে সাম্মাম ও তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি জানান, “প্রথমবারের জন্য সাম্মাম চাষ করেছি। কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই এতটা সফলতা পাবো ভাবিনি। খরচ হয়েছে মাত্র ৬০ হাজার টাকা, কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ টাকার ফসল বিক্রি করেছি। বাকি ফসলও বিক্রি হলে আরও ৫০-৬০ হাজার টাকা লাভ হবে।”

একই গ্রামের তোফেজ্জেল হোসেন বলেন, “আমাদের আনন্দনগর বিলে ছয় বিঘা জমিতে বাঙ্গী, কুমড়া, শসা, গ্রীষ্মকালীন টমেটো এবং তরমুজের চাষ করা হয়। প্রায় পুরো বছরই ঘেরের বেড়ি ফল ও সবজিতে ভরপুর থাকে। শসা বিক্রি হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকায়, আর অন্যান্য ফসলও লাখ টাকায় বিক্রি হবে। এতে মৎস্যচাষিরা বাড়তি আয় পাচ্ছেন এবং ঘেরের বেড়িতে চাষাবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।”

পাথরঘাটা গ্রামের খাজা মহিউদ্দীন পদ্মবিলে দুটি ঘেরের বেড়িতে টমেটো, লাউ, মরিচ ও লেবু চাষ করেছেন। ১০০ ও ৩৩ শতক আয়তনের এই ঘেরগুলোতে খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। তিনি আশা প্রকাশ করেন, লক্ষাধিক টাকার ফসল বিক্রি হবে। চাষিরা জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের উপ সহকারী কর্মকর্তারা নিয়মিত মিটিং ও পরামর্শের মাধ্যমে তাদের যেকোনো সমস্যা সমাধান করেন। সরকারিভাবে বিভিন্ন সময়ে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণও চাষীদের জন্য বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করছে।

কৃষকরা পাশাপাশি আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন, সরকারের কাছ থেকে খাল লিজ নিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি অন্যদের ঘেরে মাছ টেনে নিলে তাদের মারাত্মক আর্থিক ক্ষতি হয়। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন, যেন খাল লিজের মাধ্যমে এই ধরনের অপকর্ম বন্ধ করা হয়।

উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মাছের ঘেরের পাড়ে এই মৌসুমে প্রায় ৪০৫ দশমিক ৫ হেক্টর জমিতে ফল ও শাকসবজির চাষ হয়ে নতুন সবুজ বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। টিএসবি ইউনিয়নের তিলক ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিমাদ্রী বিশ্বাস বলেন, “চাষিরা যেকোনো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে পরামর্শ পাই। এ কারণে ঘেরের বেড়িতে সবজি চাষ দিন দিন বাড়ছে।”

ঘাটভোগ ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানা যোগ করেন, “সাম্মাম চাষে জাহাঙ্গীর হোসেনের সফলতা দেখেই অন্যান্য চাষীরা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আমরা নিয়মিত মনিটরিং করি এবং সমস্যা সমাধান করি।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তরুণ কুমার বালা বলেন, “চাষিরা আমাদের অফিসে আসার প্রয়োজন ছাড়াই ফোনের মাধ্যমে সেবা পাচ্ছেন। সরকারিভাবে যে কোনো প্রণোদনা বা সার-বীজ আসে তা সরাসরি প্রকৃত চাষির হাতে পৌঁছে দিচ্ছি। এতে চাষীরা অত্যন্ত খুশি।”

খুলনার বিলজুড়ে এই সবুজ বিপ্লব শুধু মৎস্যচাষিদের আয় বাড়িয়ে দিচ্ছে না, বরং বিদেশি সৌদি আরবের ফল সাম্মামসহ ফল ও সবজির চাষের মাধ্যমে এলাকার কৃষিকাজকে এক নতুন দিগন্তে পৌঁছে দিয়েছে। প্রতিটি ঘেরের বেড়ি আজকের সময়ের এক জীবন্ত উদ্যান, যেখানে কৃষকের পরিশ্রম, সৃজনশীলতা এবং সবুজের মিলনে তৈরি হয়েছে সফলতার গল্প।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।