মো.আলমগীর মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নে মেঘনা নদীর ভাঙনে দিশেহারা শত শত পরিবার। উপজেলার প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভয়াবহ নদী ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে স্থানীয়দের। ঘরবাড়ি, মসজিদ, চাতালকলসহ বহু স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীভাঙন রোধে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মেঘনা নদীর পূর্বপাড়ে পানিশ্বর ইউনিয়নের পালপাড়া, সাখাইতি ও লায়ারহাটি গ্রাম জুড়ে তীব্র ভাঙন চলছে। একের পর এক বসতঘর, ফসলি জমি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় ওসমান গনি, সুধীর পাল, উষারানী পাল, গীতা রানি পাল ও পুষ্পরানী পাল বলেন, “প্রতি বছর নদীর ঢেউয়ে আমাদের গ্রামের বড় অংশ ভেঙে যায়। এখন যে অংশটুকু টিকে আছে, সেটিও যেকোনো সময় নদীতে তলিয়ে যেতে পারে। স্থায়ী বেড়িবাঁধ ছাড়া আমাদের কোনো রক্ষা নেই।”
পানিশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মিস্টার বলেন, “নদী ভাঙনের কবলে রয়েছে পালপাড়া, শাখাইতি, শোলাবাড়ি ও দেওবাড়িয়া গ্রামের হাজারো পরিবার। এই এলাকায় প্রায় অর্ধশত চাতালকল রয়েছে, যার মধ্যে গত কয়েক বছরে ২০টির বেশি কল ও শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। আমরা বারবার স্থায়ী বেড়িবাঁধের দাবি জানালেও এখনো স্থায়ী সমাধান হয়নি।”
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরাইল শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মহসিন কবির শিহাব বলেন, “মেঘনা নদীর বামতীরে স্থায়ী প্রতিরক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ভাঙন রোধে কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।”
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মোশারফ হোসাইন জানান, “নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ ফেলার পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। স্থায়ী সমাধানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।”

