মোঃ জিহাদুল ইসলাম, ( নড়াইল প্রতিনিধি) গোপালগঞ্জ হতে ঘুরে এসেঃ
সিআইডি তদন্তের ২ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের গাফিলতিতে বিচারকার্য থমকে আছে বলে মৃত জান্নাতুন জেবার মায়ের অভিযোগ। একমাত্র কন্যা জান্নাতুন জেবাকে (১৪) হারিয়ে বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন গোপালগঞ্জের চরমানিকদাহ গ্রামের মৃত আবু বক্কারের মেয়ে মানসুরা আক্তার ইতি (৩৯)।
২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মানসুরার ২য় স্বামী ও অজ্ঞাত দুজনের সহযোগীতায় নিখোঁজ হয় যাত্রাবড়ীর মান্নান হাইস্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্রী ও মানসুরার একমাত্র মেয়ে জান্নাতুন জেবা। নিখোঁজের ৫ দিন পর ২০১৯ সালের ৪ অক্টোবর সোনারগাঁও থানা পুলিশ পিয়ারনগর (বাগানবাড়ী) জঙ্গলের ভিতর একটি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে মানসুরা থানা পুলিশের সহযোগীতায় অজ্ঞাত লাশের সনাক্ত করেন ওটাই তার নিখোঁজ হওয়া একমাত্র কন্যা জেবা। ১৯ সালের ১০ অক্টোবর “অজ্ঞাত লাশের পরিচয় সনাক্ত” শিরোনামে “দৈনিক প্রথম আলো” পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ নৃশংস ঘটনায় গত ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর মানসুরা ঢাকার সোনারগাঁ থানায় ২য় স্বামী ফজলুল করিম ওরফে মোশারেফ হোসেন দিদারসহ অজ্ঞাতনামা দু’জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৮, ধারা ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তভার সিআইডিতে হস্তান্তর হয়। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালে মানসুরা তার প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে সাব্বির হোসেন (১৮) ও জান্নাতুন জেবা (১৪) নামে দুটি সন্তানকে নিয়ে শাহাজালাল রোড, কোনাপাড়া, ঢাকায় এক ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার থানার জাফরগঞ্জ গ্রামের ফরিদ আলীর ছেলে ফজলুল করিম ওরফে মোশারফ হোসেন দিদার মানসুরার সম্পত্তির লোভে তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে রেজিষ্ট্রী কাবিন মুলে বিবাহ করেন এবং তার ঔরশে মানসুরার ঘরে আব্দুল্লাহ বিন আয়ান নামে তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়। ২য় স্বামী দিদার বিভিন্ন সময় নান কারণ দেখিয়ে মানসুরার সরলতার সুযোগ নিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় কোটি টাকা। মানসুরা দিদারকে ব্যবসা করার জন্য নিজের নামে কিস্তিতে ৩টি ট্রাক কিনে দেন এবং নমিনী হিসাবে তার প্রথম পক্ষের ছেলে সাব্বির হোসেনের নাম দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে দিদার। কেন তার নামে মালিকানা দেওয়া হলোনা এবং কেনই তার ঔরশের ছেলেকে নমিনী করা হলোনা বলে দাম্পত্য কলহে লিপ্ত হয়। এরই ধারাবহিকতায় এ নৃশংস হত্যকান্ড বলে মামলার বিবরণে জানা যায়।
মৃত জান্নাতুন জেবার মাতা মানসুরা আক্তার ইতি বিলাপ করে বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রীর এলাকার মেয়ে হয়েও আমার মেয়ের হত্যা মামলার কোন অগ্রগতি নাই। আমার মেয়ের হত্যাকরীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড়াতে আমি প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে সিআইডি তদন্ত কর্মকর্তা রাসেল তার মুঠোফোনে বলেন, মামলাটি এখনো তদন্তধীন রয়েছে।