নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি মো. শওকত হোসেন সরকার বলেছেন, তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে ঘায়েল করতে না পেরে চরিত্রহননের নোংরা পথে নেমেছে। এ ব্যাপারে গাজীপুর আদালতে মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার দুপুরে গাজীপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আারো বলেন, ওমরা হজ্ব পালনরত অবস্থায়ই ষড়যন্ত্র শুরু’ শওকত সরকার বলেন, “পবিত্র ওমরা পালন শেষে দেশে ফেরার পর জানতে পারি, ২৩ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে জড়িয়ে ১০ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে সম্পূর্ণ মিথ্যা, একপেশে ও বাস্তবতাবিবর্জিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। একজন রাজনীতিবিদের চরিত্রহননের জন্য কেউ এত নিচে নামতে পারে, তা কল্পনাতীত।”
তিনি জানান, প্রতিবেদনে আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তির বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, তিনি শওকত সরকারকে টাকা দিচ্ছেন। “ভিডিওর সেই অংশটি সত্য, কিন্তু সেটি কোনো চাঁদাবাজির নয়—গাড়ি বিক্রির টাকা,” বলেন বিএনপি নেতা।
‘গাড়ি বিক্রির টাকা বিকৃতভাবে প্রচার’ শওকত সরকার ব্যাখ্যা করেন, ২০২৪ সালের ২৮ জুলাই জনৈক আফজাল হোসেন তার ছেলের প্রতিষ্ঠান ‘এস/এস কার সাম্রাজ্য’ থেকে ৪০ লাখ টাকায় একটি নোয়া স্কয়ার গাড়ি ক্রয় করেন। ১০ লাখ টাকার চেক জামানত রেখে গাড়িটি হস্তান্তর করা হয়। পরে তিনি ব্যাংক ঋণ নিয়ে ধাপে ধাপে বাকি টাকা পরিশোধ করেন।
“কিন্তু তিনি যখন কিস্তির টাকা পরিশোধ করছিলেন, তখন গোপনে ভিডিও ধারণ করে পরে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাঁদাবাজির ভিডিও হিসেবে প্রচার করেন। এটি সম্পূর্ণ বিকৃত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত,” দাবি করেন শওকত সরকার।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, “ওই আফজাল হোসেন অতীতে নিজেকে গাজীপুর মহানগর যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন এবং পোস্টার–লিফলেটে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছবিও ব্যবহার করতেন। জুলাই আন্দোলনের পর হঠাৎ ভোল বদলে নিজেকে বিলুপ্ত জিয়া মঞ্চের নেতা পরিচয় দিচ্ছেন। আসলে তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকেই সুবিধাবাদী রাজনীতি করেছেন।”
তিনি অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনের পর একটি মহল জাতীয়তাবাদী নেতাদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক ন্যারেটিভ তৈরি করতে মাঠে নেমেছে। “জুলাই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় কারিগর বিএনপি নেতাকর্মীদের টার্গেট করে একের পর এক প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে,” বলেন শওকত সরকার।
মানহানির মামলা করেছি’, শওকত সরকার জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে প্রচারিত মিথ্যা ভিডিওর প্রতিবাদে তিনি ইতিমধ্যে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫-এ জনৈক আফজাল হোসেনকে আসামি করে মানহানির মামলা করেছেন। তিনি বলেন, “আমি চাই, যদি তার সৎ সাহস থাকে, তবে আদালতে এসে নিজের বক্তব্য প্রমাণ করুন। সত্যের জয় হবেই ইনশাআল্লাহ।”
‘জমিদার বাড়ি দখল অভিযোগও মিথ্যা’ :কাশিমপুর জমিদার বাড়ি দখলের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “২০০৫ সালে ওই বাড়ির অর্ধেক অংশ আমি ক্রয় করি। ২০১২ সালে তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নির্দেশে তার অনুসারীরা বারবার হামলা চালায়। পরে আমি হাইকোর্টে রিট করি। ২০২৩ সালে আদালত সরকারপক্ষকে ওই বাড়িতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। পরবর্তীতে নতুন রেকর্ডে আমি বি ডি এস পর্চা পাই। কাজেই দখলের অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা।‘জাতীয়তাবাদী আদর্শ থেকে এক বিন্দু পিছু হটি নাই’।
শওকত সরকার বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ৪২টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। কাশিমপুর, টঙ্গী, সদর ও আশুলিয়াসহ বিভিন্ন থানায় হয়রানিমূলক মামলায় আমি বারবার কারাভোগ করেছি। জেল-জুলুম, নির্যাতন, ভয়ভীতি—সবকিছু সহ্য করেছি, কিন্তু জাতীয়তাবাদী আদর্শ থেকে এক বিন্দুও পিছু হটি নাই।”
তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা যখন মাঠে পারে না, তখন কুৎসা রটিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করে। কিন্তু গাজীপুরবাসী জানে, আমি জনগণের রাজনীতি করি। আমার বিচার আমি জনগণের আদালতে ও আল্লাহর কাছে তুলে দিলাম।”
সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.