আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বিএনপির নবগঠিত উপজেলা ও পৌর কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও মশাল মিছিল করেছে দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ও অর্থবিত্তশালী ব্যক্তিদের নতুন কমিটিতে পদ দেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় নেতারা।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার হাসপাতাল রোড এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে পৌরসদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাজারের চৌরাস্তায় এক প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য দেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খোশবুর রহমান খোকন। তিনি বলেন, “যারা বছরের পর বছর হামলা-মামলা, জেল-জুলুম সহ্য করে বিএনপিকে টিকিয়ে রেখেছেন, তাদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এই কমিটি আমরা মানি না, মানবও না।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন আলফাডাঙ্গা পৌর যুবদলের আহ্বায়ক সৈয়দ মিজানুর রহমান, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মাহমুদুল হাসান ইয়াদ, পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি কায়েম শিকদার, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান দাউদ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরুল হাসান, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, ছাত্রনেতা আবু সালেহ মুশা, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মমিনুল ইসলাম সোহাগ, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মুকিনুর রহমান, বানা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি রতন হাদী ও পাচুড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শাহজাহানসহ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল ও ছাত্রদলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
সমাবেশ শেষে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা সন্ধ্যায় মশাল মিছিল বের করে আলফাডাঙ্গা বাজার প্রদক্ষিণ করেন এবং হাসপাতাল রোডে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। তারা এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখেন, ফলে আলফাডাঙ্গা-ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, গত ২৩ অক্টোবর রাতে ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা ও সদস্য সচিব একেএম কিবরিয়া স্বপন ১০১ সদস্যবিশিষ্ট উপজেলা ও পৌর বিএনপির দুটি কমিটি ঘোষণা করেন। অভিযোগ ওঠে, এই কমিটি অর্থের বিনিময়ে গঠন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ অনেককেই পদ দেওয়া হয়েছে, অথচ ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বঞ্চিত করা হয়েছে।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে টাকা দিয়ে কেনা কমিটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চলবে।”
এই ঘটনার পর আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল নতুন করে তীব্র আকার ধারণ করেছে। তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন, ত্যাগী নেতৃত্বের ভিত্তিতে নতুনভাবে সংগঠন পুনর্গঠনের দাবি অব্যাহত থাকবে।

