জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্স নবায়ন ফি কমানো, নতুন করে লাইসেন্স প্রদান না করা, লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধসহ ৫ দফা দাবিতে অটোরিকশা চালকদের ধর্মঘট চলছে।
রবিবার (২ নভেম্বর) সকাল থেকে জামালপুর ইজিবাইক ও রিকশা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে এই ধর্মঘট শুরু হয়। দুপুর ১টা পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে।
ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকে শহরে বন্ধ রয়েছে সকল প্রকার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল। অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও অফিসগামী যাত্রীরা। সকালে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য সাধারণ যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে ও যানবাহনের জন্য ভিড় করতে দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজনে অনেকে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে যাচ্ছেন।
অটোরিকশা চালক হাসান আলী বলেন, “লাইসেন্সের ফি আগেরটাই নির্ধারণ করতে হবে, বৃদ্ধি করা যাবে না। লাল ও সবুজ রঙ করে একদিন পর পর অটোরিকশা চালানোর নিয়ম বাতিল করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।”
অটোরিকশা চালক সোহেল মিয়া বলেন, “২ হাজার ৫শ টাকার লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি করে ৩ হাজার ৫শ টাকা করা হয়েছে। ৩ হাজার টাকার ফি বৃদ্ধি করে ৪ হাজার ৫শ টাকা করা হয়েছে। আমাদের দাবি, লাইসেন্স ফি কমিয়ে পূর্বের ফি বহাল রাখতে হবে।”
সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সময় কোনো যানবাহন না পেয়ে গৃহিণী শান্তা জানান, “অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকায় বাচ্চাদের স্কুলে নেওয়া, রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে কষ্ট না দিয়ে প্রশাসনের কাছে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরা উচিত।”
চাকরিজীবী শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে হাঁটছি। অফিসে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন পাচ্ছি না। সময়মতো অফিসে পৌঁছাতে পারব কি না, তা অনিশ্চিত। ধর্মঘটের কারণে আমাদের কষ্ট হচ্ছে। এমন ধর্মঘট না হওয়াই ভালো, সরকার যেন এ বিষয়ে নজর দেয়।”
জামালপুর ইজিবাইক ও রিকশা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা খাইরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের সংগঠনের কোনো কমিটি নেই। আমরা সবাই নেতা, সবাই মালিক, সবাই চালক-শ্রমিক। আমরা গত ৩০ অক্টোবর জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমের কাছে আমাদের দাবিগুলো নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। প্রশাসনের সাড়া না পেয়ে আজ আমরা দুপুর ১টা পর্যন্ত ধর্মঘট করব। দুপুর ১টায় শহরের গেইটপাড় এলাকা থেকে অটোরিকশা চালকদের একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হবে। মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হবে এবং সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
অটোরিকশা চালকদের ৫ দফা দাবিগুলো হলো—
১. ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্স নবায়ন ফি কমানো,
২. নতুন করে লাইসেন্স প্রদান না করা,
৩. গাড়ি রঙ করার সিদ্ধান্ত বাতিল,
৪. যানজট নিরসনে শহরের প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো,
৫. লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করা।

