জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের কারণে চলতি মৌসুমের আমন ধান ও শীতকালীন সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মাঠের পাকা ও আধাপাকা ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে, গাছের ডগা ফেটে গেছে এবং অনেক ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ভারি বৃষ্টির কারণে অনেক ধানক্ষেত নুয়ে পড়েছে। এতে ধানের ফলন ও গুণগত মান নষ্ট হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি আগাম আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ ও শাকের মতো শীতকালীন সবজির ক্ষেতও পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতি ঠেকাতে কৃষকরা নালা কেটে জমি থেকে পানি বের করার চেষ্টা করছেন।
কালাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ১১ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ করা হয়েছে।
আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হাতিয়র গ্রামের কৃষক কাজী মফিদুল ইসলাম বলেন, “দু’দিন আগে সাত বিঘা জমির ধান কেটে শুকানোর জন্য মাঠে রেখেছিলাম। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টিতে ওই ধান পানিতে ভিজে নষ্ট হতে বসেছে।”
আরেক কৃষক জুয়েল বলেন, “কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে আমার দুই বিঘা জমির পাকা ধান নুয়ে পড়েছে। যে পরিমাণ ফলন আশা করেছিলাম, তা আর হবে না। এভাবে আধাপাকা ধান পড়ে থাকলে ফলনও ভালো হবে না।”
একই এলাকার কৃষক শাহাজাহান আলী বলেন, “হঠাৎ করে কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিতে আমার সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। প্রতি বছর সবজি চাষ করে লাভ পাই, কিন্তু এবার ক্ষতির আশঙ্কা করছি।”
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হারুনুর রশিদ বলেন, “বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে উপজেলার কিছু এলাকায় ধান ও শীতকালীন সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা কৃষকদের দ্রুত পানি নিষ্কাশন, নুয়ে পড়া ধানগাছ বাঁধা ও জমিতে পানি জমে না থাকার ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিচ্ছি। আবহাওয়া অনুকূলে এলে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

