এম.এস.রয়েল,কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের মাত্র তিন-চতুর্থাংশ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাকে কেন্দ্র করে যুগের পর যুগ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা পাকা হলেও পাল্টায়নি মাসকা থেকে চকসাদক কোনাপাড়া পর্যন্ত এলজিইডি আইডিভুক্ত এ রাস্তাটির ভাগ্য। শুকনো মৌসুমে ধুলাবালির ঝটকা, আর বর্ষায় হাঁটাচলাও দুঃসাধ্য—এ যেন এলাকাবাসীর জন্য স্থায়ী অভিশাপ।
গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, বর্ষায় হাঁটাও হয়ে যায় দুরূহ। তবুও প্রয়োজনের তাগিদে প্রতিদিন এ রাস্তায় চলাচল করতে বাধ্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কৃষক, বাজারগামী মানুষ, রোগীসহ শত শত পথচারী। একটি মাত্র পাকা রাস্তার অভাবে আর্থসামাজিক উন্নয়নেও পিছিয়ে পড়েছে এলাকা।
রাস্তাটির প্রবেশ মুখে কয়েক বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদ আংশিক ইটের সলিং নির্মাণ করলেও তা এখন ভেঙে–চুরে পুকুরগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।
সরেজমিন দেখা যায়, মাসকা গ্রামে রয়েছে বৃহত্তম গরুর হাট, ইউনিয়নের একমাত্র উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট অফিস, বড় দুটি মহিলা মাদ্রাসা, জামেয়া মাদানিয়া দারুল উলুম নামে অন্যতম বৃহৎ কওমি মাদ্রাসা, একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, একটি সোয়েটার ফ্যাক্টরি এবং ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
ভোটকেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয় বিদ্যালয়টি। ফলে রাস্তাটির গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু বর্ষাকালে শিক্ষক-শিক্ষিকারা যানবাহন পোস্ট অফিস মাঠে রেখে কাদা মাড়িয়ে স্কুলে যেতে বাধ্য হন। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আরও বেশি। নির্বাচনের সময় গাড়ি রেখে হেঁটে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছাতে হয় সংশ্লিষ্টদের। অথচ এলজিইডির আওতাভুক্ত এ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পাকাকরণে দীর্ঘদিন ধরে উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
মাসকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে রাস্তাটি পাকাকরণ এখনই জরুরি। চকসাদক কোনাপাড়া গ্রামের হাদিস মিয়া ও হুমায়ূন কবির জানান, আমরা চরম বৈষম্যের শিকার বছরের পর বছর ধরে একই কষ্ট।
মাসকা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমানও রাস্তাটির অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে পাকাকরণের দাবি জানান।
রাস্তাটির করুণ অবস্থার কথা স্বীকার করে কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. আল আমিন সরকার বলেন, যথাশীঘ্রই রাস্তাটি নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

