বাকেরগঞ্জ( বরিশাল) প্রতিনিধি
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রাঙামাটি নদীর ওপর গোমা সেতুর সব গার্ডার বসানো কাজসহ অ্যাপ্রোচ সড়কও প্রস্তুত হয়েছিল ২০২৩ সালে। তবু উপজেলার চরাদি, দুধল, কবাই, নলুয়া, ফরিদপুর, দুর্গাপাশা এই ছয় ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলা বাউফল, দুমকি উপজেলার লাখ লাখ মানুষকে দীর্ঘদিন অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। কারণ, সেতুর মাঝের দুটি স্প্যান না বসানোয় গোমা সেতুটি চলাচলের অযোগ্য ছিল।
অবশেষে ৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টায় গোমা সেতুর উপরে দ্বিতীয় স্প্যান বসানো সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে প্রথম স্প্যানটি গত মঙ্গলবার বসানো হয়। দ্বিতীয় স্প্যানটি উঠানোর পরেই ৮ বছরের অপেক্ষার অবসান হয়েছে বাকেরগঞ্জ উপজেলা সহ পার্শ্ববর্তী উপজেলা বাউফল ও দুমকি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের।
নির্মাণাধীন গোমা সেতুর নির্মাণ প্রকল্পে ২০১৭ সালে ৫৭ কোটি ৬২ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ৩ বছর মেয়াদের প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছিল। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। যে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০২০ সালের জুন মাসে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ ৪৪ ভাগ সম্পন্ন হলেও তখন উচ্চতা নিয়ে আপত্তি তোলে বিআইডব্লিউটিএ।ফলে সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছিল। পরে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের দফায় দফায় সভা এবং বিশেষজ্ঞ দলের পরিদর্শনের পর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমঝোতায় সেতুর সংশোধিত প্রকল্প গ্রহণ করে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, প্রথম প্রকল্প অনুযায়ী, মাঝ বরাবর সেতুর উচ্চতা রাখা হয়েছিল সর্বোচ্চ জোয়ারের সময় ৭ দশমিক ৮৬ মিটার। পিলার স্থাপনের পর বিআইডব্লিউটিএ আপত্তি তুলে জানায়, এ উচ্চতায় রাঙ্গামাটি নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য উচ্চতার প্রয়োজন কমপক্ষে ১২ দশমিক ২ মিটার।
সওজ থেকে দাবি করা হয়, উচ্চতা নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র চূড়ান্ত সম্মতিপত্র নিয়েই প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। এ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের দ্বন্দ্বের বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে নিষ্পত্তি হয়।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, সংশোধিত প্রকল্পে সেতুর নকশায় পরিবর্তন আনা হয়। নদীপথ সচল রাখার জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র দাবি অনুযায়ী, সেতুর মাঝ বরাবর সর্বোচ্চ জোয়ারের সময় ১২ দশমিক ৪ মিটার উচ্চতা রেখে নতুন নকশা করা হয়েছে। সংশোধিত প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে ৩৪ কোটি ৮২ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
প্রকল্পে বলা হয়েছে, বরিশাল-লক্ষ্মীপাশা-দুমকি জেলা সড়কের ১৪ কিলোমিটারে রাঙ্গামাটি নদীর ওপর ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রশস্ত দুই লেনে সেতু নির্মিত হবে। সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ২৮৩ দশমিক ১৮৮ মিটার। সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্প ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯২ কোটি ৪৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এবং সেতুর মাঝখানের ( ৩,৪) নং পিলারের গার্ডারের পরিবর্তে নতুন নকশা অনুযায়ী তৈরি করা হয় স্টিলের দুটি স্প্যান।
সেতুটি নির্মাণে প্রথম প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছিল ৫ বছর হয়েছে। সড়ক জনপথ থেকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল সেতুর( ৩,৪) নং পিলারের স্প্যান নির্মাণ কাজ শেষ করে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের সেতুটি চালু করা হবে। বিভিন্ন জটিলতার কারণে সেতুর মাঝ খানে স্প্যান দুটি নির্ধারিত সময়ে বসানো সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সেতুর স্প্যান দুটি দৃশ্যমান হয়েছে।
বরিশাল সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, নদীর ধারা পরিবর্তন ও জমি অধিগ্রহণের কারণে বারবার নকশা পরিবর্তন করতে হয়েছে। এখন কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। ইতিমধ্যে সেতুর মাঝখানে দুটি স্প্যান বসানো সম্পন্ন হয়েছে। এখন স্প্যানের মাঝখানে ঢালাই এর কাজ বাকি রয়েছে। আশা করছি আগামি জানুয়ারি মাসেই সেতুটি চালু করতে পারব।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.