দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
বিশ্ববরেণ্য বাউল শিল্পী ফকির শফি মন্ডলের খিলাফত দিবস উপলক্ষে দৌলতপুরের হোসেনাবাদ গ্রামের ‘সুধাসিন্ধু ভাব আশ্রম’ আখড়াবাড়িতে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হলো দু’দিনব্যাপী সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠান।
২০২২ সালের ১১ নভেম্বর শফি মন্ডল সস্ত্রীক খেলাফত গ্রহণ করেন। ইহজাগতিক লোভ, লালসা ও মায়া-মমতা ত্যাগ করে তিনি এবং তার স্ত্রী জরিনা খাতুন সাধারণ জীবন যাপন শুরু করেন। এরপর থেকে তারা লালন সাঁইজির বাণী প্রচারে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন।
সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো সাধু, গুরু, বাউল ও লালন অনুসারী অংশগ্রহণ করেন। ফকির শফি মন্ডল উপস্থিতদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, “আমি যে পথ দিয়ে হাটছি সেই পথেই সাধুদের চরণের ধুলি পাচ্ছি, এটি আমার জন্য অনেক পূর্ণতার। আগামীতেও আপনাদের কৃপা দর্শন নিয়ে চলতে চাই।”
শফি মন্ডলের বড় মেয়ে ফারজানা ববি লিনা বলেন, “আমার বাবা সংসার ধর্ম ত্যাগ করে সাধারণ জীবন যাপন করছেন। তিনি শিখরে পৌঁছে সেখানে থেকে শেকড়ে নেমে এসেছেন। তাঁর এই অর্জন আমাদের জন্য পরম প্রাপ্তি।”
রাত ৮টার পর মুড়ি সেবা দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর ফকির শফি মন্ডল ও দেশের খ্যাতিমান বাউল শিল্পীরা লালনের বাণী পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠান চলেছে গভীর রাত পর্যন্ত।
ঢাকা থেকে আসা এক প্রবীণ সাংবাদিক জানান, “ফকির শফি মন্ডল দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লালন সাঁইজির বাণী পৌঁছে দিচ্ছেন। তার সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠান সমাজে হিংসা, বৈষম্য ও বিদ্বেষ দূর করে অহিংস মানবতাবাদী সমাজ গঠনে সহায়ক হবে।”
আজ বুধবার বিকেলে পূর্ণসেবা গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠান। তবে আখড়াবাড়িতে সাধুরা আরও কয়েকদিন অবস্থান করবেন। অনুষ্ঠানের সঙ্গে মিলিত হয়ে আখড়াবাড়ি চত্বরে বসেছিল গ্রামীণ মেলার আয়োজন।

