বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের ৩০ নম্বর মধ্যরাকুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৃঙ্খলা ভঙ্গ, শ্রেণি কার্যক্রমে অনাগ্রহ, সময়মতো ক্লাস না নেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি অবহেলার অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময় সকাল ৯টা ৩০ মিনিট হলেও শিক্ষকরা অনেকেই সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে স্কুলে আসেন। নিয়মিতভাবে কোনো অ্যাসেম্বলি অনুষ্ঠিত হয় না। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি যাচাই বা শৃঙ্খলা রক্ষার দিকেও তেমন নজর দেওয়া হয় না।
অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষক মিতু আক্তার (যিনি স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা রাহাত সেরনিয়াবাতের স্ত্রী) প্রায়ই শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের টেবিলের ওপর পা তুলে বসেন। অন্যদিকে শিক্ষক তন্নী আক্তার ক্লাসে লেখার কাজ দিয়ে নিজে বাইরে চলে যান। কোনো অভিভাবক অভিযোগ করলে তার সন্তানকে শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগও উঠেছে।
বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা অধিকাংশ সময় লাইব্রেরিতে বসে সময় পার করেন বলে জানা গেছে। এসব বিষয়ে অভিযোগ জানানো হলেও প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগম কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিভাবকরা দাবি করেন।
শিক্ষার মানের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত অবস্থাও নাজুক। শিশু শ্রেণি ও প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত টেবিল-চেয়ার না থাকায় তারা মেঝেতে বসে খাতা রেখে লেখালেখি করে। শ্রেণিকক্ষে ফ্যান না থাকায় গরমে বাচ্চারা কষ্ট পাচ্ছে। দ্বিতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির কক্ষের ফ্যান গত এক বছর ধরে নষ্ট থাকলেও এখনো তা মেরামত করা হয়নি।
অভিভাবকরা আরও জানান, সরকারি বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও শিশু শ্রেণির জন্য কোনো খেলনা কেনা হয়নি। বিদ্যালয়ের টয়লেট সবসময় নোংরা ও ব্যবহার অনুপযোগী অবস্থায় পড়ে থাকে। পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের বোর্ডে উত্তর লিখে দেওয়ার কারণে মেধাবী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না বলেও অভিযোগ ওঠে।
অভিভাবকদের আরও অভিযোগ, কোনো বিষয়ে কথা বলতে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের বসতে দেয় না এবং দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। এতে অনেকেই বিদ্যালয়ে যেতে অনীহা প্রকাশ করছেন। এসব কারণে শিক্ষার মান ও পরিবেশ অবনতির ফলে অনেক শিক্ষার্থী অন্য বিদ্যালয়ে চলে যাচ্ছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগম বলেন, অভিযোগগুলোর অধিকাংশই সত্য নয়। কিছু বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা মিতু আক্তার বলেন, “আমি অসুস্থ থাকার কারণে মাঝে মাঝে শ্রেণিকক্ষ থেকে লাইব্রেরিতে গিয়ে বসি। তবে এটা প্রতিনিয়ত নয়।
বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসিমা বেগম বলেন, আমি এই উপজেলায় নতুন যোগ দিয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিবেশ উন্নয়নে দ্রুত তদন্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.