মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার তেলিহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দেড় বছর ধরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখার কারণে খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি মানসিক বিকাশেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক এবং অভিভাবকেরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উদয় চন্দ্র বর্মণ জানান, বিদ্যালয়ের ৪২ শতক আয়তনের মাঠে ১ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৭৭৪ টাকার নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে। কাজের মেয়াদ শেষ হয় ২০২৫ সালের জুনে, কিন্তু ভবন নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিরোজ কনস্ট্রাকশন (স্বত্বাধিকারী ফিরোজ আহমেদ রিজু) কাজের সামগ্রী ইট, বালি, খোয়া ইত্যাদি দেড় বছর ধরে মাঠে রেখে দিয়েছে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১০৫ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীদের দাবি, শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশের স্বার্থে মাঠ থেকে দ্রত নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে খেলাধুলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা দরকার।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুই, রাকিব ও মোহনাসহ অনেকে বলেন, ‘আমরা স্কুলে এসে মাঠে খেলতে পারি না। শুধু ক্লাস করি, তারপর মন খারাপ লাগে।
অভিভাবকরা জানান, শুধু লেখাপড়ার মাধ্যমে শিশুদের পূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। খেলাধুলা মানসিক ও শারীরিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে শিশুদের সেই পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উদয় চন্দ্র বর্মণ বলেন, “প্রায় ছয় মাস ধরে কাজ বন্ধ। কিন্তু ঠিকাদার নির্মাণসামগ্রী সরায়নি। ফলে মাঠে আর কোনো খেলাধুলা করা যাচ্ছে না।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিরোজ কনস্ট্রাকশনের সাথে কথা হলে তারা জানান, একাডেমিক ভবনের বাকি কাজগুলো দ্রত করা হবে। আর বিদ্যালয়ের মাঠে নির্মাণসামগ্রীগুলে সরানো হচ্ছে।
প্যানেল চেয়ারম্যান উদয়পুর ইউনিয়নে মোছা. কারিমা বেগম বলেন,“বিদ্যালয়ের মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখা খুবই দুঃখজনক। দ্রত এলজিডি ও ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।”
কালাই উপজেলা এলজিডি প্রকৌশলী সুমন কুমার দেবনাথ বলেন, “আমি উপজেলায় নতুন যোগ দিয়েছি। বিষয়টি জেনে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে দ্রত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”

