জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় ধানের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় এবং বাজারের দাম কম থাকায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সার, সেচ এবং শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে, যা অনেক ক্ষেত্রে ধানের বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি হয়ে গেছে।চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধান কাটার শুরুতে ধানের দাম কিছুটা সহনীয় পর্যায় ছিল। কিন্তু এলাকার ফড়িয়া ধান ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারদের সিন্ডিকেটের কারণে প্রতি দিন ধানের দাম মণ প্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা হারে কমছে। এর ফলে অনেক কৃষক লোকসানের মুখে পড়ছেন এবং তাদের ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা যায়, সরকার চলতি মৌসুমে প্রতি কেজি ধানের দাম ৩৬ টাকা এবং প্রতি মণ ১,৪৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু স্থানীয় কালাই পাঁচশিরা, পুনট, মোলামগাড়ী,নুনুজ,হাতিয়রসহ কয়েকটি হাটবাজারে কৃষকেরা জানাচ্ছেন, প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১,০৫০ থেকে ১,১০০ টাকায়—যা ঘোষিত দামের তুলনায় অনেক কম।
কালাই উপজেলার কৃষক কাজী মোঃ জুয়েল হোসেন আমার জমিতে এবার রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশ পাশের সবারই ভালো ফলন হয়েছে। তারপরেও খরচের কারণে কারও খুশি নেই। কারণ খরচের তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি, বরং দিন দিন কমছে। তিনি আরও বলেন আবাদের ব্যয় ছাড়া ও প্রতি বিঘায় ধান কাটতে খরচ পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা। চলতি মৌসুমে শুরুতে ধানের দাম ছিল আশানুরূপ। দিন যাচ্ছে আর অসাধু ধান ব্যবসায়ী আড়ৎদারদের কারণে লোকসান গুণতে হচ্ছে কৃষকদের।
এ উপজেলার আরেক কৃষক শাহীন মন্ডল বলেন, আমি এবার পাঁচবিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি।এবং সারও কীটনাশকের দাম এমনিতে বেশি। উচ্চ মজুরি দিয়ে ও শ্রমিক পাওয়া যায় না।এ অবস্থায় আমরা যদি ধানের ন্যায্য দাম না পাই তাহলে কোথায় যাব।আমরা কৃষকরা কী করব।
আনিছুর রহমান নামে কৃষক বলেন, ‘শ্রমিকের মজুরি দাম বেড়েছে, উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এর মধ্যে আবার ধান কাটাও পুরো শেষ হয়নি। বাজারে দাম আরও কমতে পারে-এ ভাবনায় দিনরাত দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে।’অন্যদিকে ধান ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বাড়ছে, কিন্তু নগদ টাকার সংকট এবং মিল মালিকদের কম কেনার কারণে দাম ধরে রাখা যাচ্ছে না।
হাতিয়র বাজারে ধান ব্যবসায়ী এনামুল বলেন, ,গত মৌসুমের ধান-চাল এখনো মজুত থেকে গেছে। মিলাররাও এখনো নতুন ধান কেনা শুরু করেননি। এ জন্য ধানের বাজার নিম্নমুখী।
কালাই উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হারুনুর রশিদ বলেন,এখনো উপজেলার প্রায় অর্ধেক ধান কাটা–মাড়াই বাকি। ধান কাটার গতি বাড়ায় বাজারে সরবরাহও বাড়ছে। আমরা মাঠপর্যায়ে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। তিনি আরও বলেন, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ১১ হাজার ৫শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.