শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুরে বাঙালী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে উপজেলার তিনটি গ্রাম। সীমাবাড়ি ইউনিয়নের ঘাশুড়িয়া ও নলুয়া এবং সুঘাট ইউনিয়নের চকপাহাড়ি গ্রাম নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। গত দুই মাসে শুধু ঘাশুড়িয়া গ্রামেই অন্তত ১৫ বিঘা জমি ও ৫০টির বেশি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরও। শুষ্ক মৌসুমেও এমন ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে শত শত পরিবার।
সরেজমিন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে বাঙালী নদীতে খননকাজ হয়। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ—মানচিত্র অনুযায়ী নদীর মূল অবস্থান থেকে প্রায় ৬০০ ফুট উত্তরে থাকার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লোকালয়ের দিকে গভীরভাবে খনন করে। এর ফলে বসতবাড়ি ও আবাদি জমির পাশ দিয়ে নদীর স্রোত ধেয়ে আসছে। গ্রামবাসী, জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে লিখিত অভিযোগ করলেও তা উপেক্ষিত হয়।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘাশুড়িয়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুস সাত্তার বলেন, “নদী যেখানে ছিল, সেখানে খনন করলে আজ আমাদের বাড়ি-ঘর নদীতে যেত না। এখন অন্যের জমিতে ছাপড়া তুলে থাকতে হচ্ছে।” একই গ্রামের আব্দুস সালামসহ বহু কৃষক এখন ভূমিহীন।
সুঘাট ইউনিয়নের চকপাহাড়ি গ্রামও ভাঙনের কবলে পড়েছে। নদীর কিনারায় থাকা ১১টি বাড়ির পাশাপাশি আশ্রয়ণ প্রকল্পের অন্তত ৪টি ঘর চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রকল্পের বাসিন্দারা জানান, “মাথা গোঁজার শেষ ঠাঁইটুকু হারানোর ভয় এখন আমাদের পিছু ছাড়ছে না।” নলুয়া গ্রামেও ভাঙন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
এ ভাঙনের কারণে নদী থেকে সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে তিন গ্রামের প্রায় ৫০০ বিঘা জমিতে যে চাষাবাদ করা হতো, সেগুলো নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে আসন্ন মৌসুমে ফসল উৎপাদন নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
স্থানীয় কৃষক নূরে আলম ও আফছার আলী অভিযোগ করেন, “আমরা অভিযোগ করেছিলাম, প্রশাসন যদি গুরুত্ব দিত, তাহলে আজ গ্রামগুলো এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়ত না।”
এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ভাঙন প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মঞ্জুরুল আলম বলেন, তিনি ভাঙন পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত আছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানানোর প্রস্তুতি চলছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নতুন নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, তিনি সদ্য দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। দ্রুত সরেজমিনে পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.