আলীকদম, বান্দরবান(প্রতিনিধি)
বান্দরবান জেলার আলীকদম থানার আওতাধীন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা জোরদার ও পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে আলীকদম সেনা জোন এবং উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে বেআইনিভাবে মাটি কাটার দায়ে সর্বমোট সাত লক্ষ পঞ্চাশ হাজার (৭,৫০,০০০) টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা ৩০ মিনিট থেকে দুপুর ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত আলীকদম সেনা জোনের আওতাধীন ১নং সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ-পূর্ব পালংপাড়া এলাকায় এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে ক্যাপ্টেন মোঃ হিবরুল উম্মা হামীম-এর নেতৃত্বে একটি ‘সি’ টাইপ বিশেষ টহল দল অংশ নেয়।
অভিযানকালে ঘটনাস্থল থেকে বেআইনিভাবে মাটি কাটার কাজে ব্যবহৃত ৩টি স্ক্যাভেটর ও ৫টি ডাম্পার ট্রাক জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে আলীকদম থানার টহল পুলিশের সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মনজুর আলম মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন।
মোবাইল কোর্টে মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর ৪(চ) ধারা অনুযায়ী মাটি কাটার কার্যক্রম তদারকির দায়ে লাইনম্যান মোঃ আবু হানিফ (৪৩)-কে আটক করা হয়। তাকে দুই লক্ষ (২,০০,০০০) টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয় এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া, মাটি পরিবহনে ব্যবহৃত ৫টি ডাম্পার ট্রাকের মালিককে ৫০ হাজার টাকা করে মোট দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার (২,৫০,০০০) টাকা এবং প্রতিটি স্ক্যাভেটরের মালিককে এক লক্ষ টাকা করে মোট তিন লক্ষ (৩,০০,০০০) টাকা জরিমানা করা হয়। সবমিলিয়ে অভিযানে সর্বমোট সাত লক্ষ পঞ্চাশ হাজার (৭,৫০,০০০) টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি ও জব্দকৃত যানবাহন ও যন্ত্রপাতি আলীকদম থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে। অর্থদণ্ড পরিশোধ সাপেক্ষে যানবাহন ও যন্ত্রপাতি অবমুক্ত করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
গোপন সূত্রে জানা যায়, অভিযানের সময় ঘটনাস্থলের মালিক ছিলেন আলীকদম উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও রুপমুহুরী রিসোর্টের মালিক মোঃ মনছুর আলম এবং মাটি কাটার কার্যক্রমের দায়িত্বে ছিলেন আলীকদম ইউনিয়ন যুবদলের নেতা মোঃ ইলিয়াছ শিকদার।
অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বেআইনি মাটি কাটাসহ নানা ধরনের বিশৃঙ্খল কার্যক্রম চলছিল। সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের এ ধরনের সময়োপযোগী ও দৃঢ় উদ্যোগ জনস্বার্থ রক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
স্থানীয়রা আশা প্রকাশ করেন, জনস্বার্থ ও পরিবেশ সুরক্ষায় সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের এ ধরনের যৌথ অভিযান ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে অব্যাহত থাকবে।

