মাসুদ রানা, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ৬ নম্বর গোয়ালডিহি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের নামে ভয়ভীতি, অতিরিক্ত টাকা আদায় ও অনিয়মের অভিযোগে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
দীর্ঘদিন ধরে চলা এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় ভূমি মালিকরা।
সর্বশেষ অভিযোগে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) হাসিমপুর মৌজার ১৪৯৮ নম্বর খতিয়ানের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের সময় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস সাদেক একটি বিকাশ নম্বর (০১৭৬৮৯০৬৭০৭) থেকে ৪ হাজার ৫০ টাকা গ্রহণ করেন। অথচ সরকারিভাবে প্রদত্ত দাখিলায় কর আদায়ের পরিমাণ দেখানো হয় মাত্র ২ হাজার ২৪০ টাকা।
ভুক্তভোগী ভূমি মালিকদের অভিযোগ, অতিরিক্ত টাকার বিষয়ে প্রশ্ন তুললেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ভয়ভীতি ও হুমকির আশ্রয় নেন। কেউ প্রতিবাদ করলে ফাইল আটকে রাখা, কাজ দীর্ঘসূত্রতায় ফেলা কিংবা ভবিষ্যতে হয়রানির হুমকি দেওয়া হয়।
শুধু ভূমি উন্নয়ন কর নয়, নামজারি বা মিউটেশন সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দিতেও প্রতি আবেদন থেকে এক থেকে দুই হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের ভাষ্য, টাকা না দিলে রিপোর্ট আটকে রাখা বা ইচ্ছাকৃতভাবে নেতিবাচক মন্তব্য যুক্ত করার ভয় দেখানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে একই ধরনের অনিয়ম ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ ভূমি মালিকরা। এতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কাজ করতে এসে আতঙ্ক ও অসহায়ত্বে পড়ছেন তারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা আব্দুস সাদেকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথমে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে পরবর্তীতে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় কথা বলেন ও গালিগালাজ করেন, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
স্থানীয়দের প্রশ্ন একই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ ওঠার পরও কেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? তারা অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত, অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অয়ন ফারহান শামস বলেন, এ সংক্রান্ত কিছু মৌখিক অভিযোগ আমি পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

