গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর দুধ দিয়ে গোসল করেছেন রিয়াদ শরিফ নামের এক যুবক। আলোচিত এই যুবক উপজেলার সাজাইল ইউনিয়নের ২ নং ভাট্টাইধোবা গ্রামের হাসান শরিফের ছেলে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) উপজেলার ভাট্টাইধোবা চরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মনের আনন্দে তার নিজ বাড়িতে ১০ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করেন রিয়াদ শরিফ। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া দুধ দিয়ে গোসলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক বাড়ির উঠানে দাড়িয়ে আছে। পাশে রয়েছে বালতি ভর্তি দুধ। সেখানে নিজে ও তার কন্যা শিশু রোজা মনির মাথায় ও গায়ে দুধ দিয়ে গোসল করছেন। এ সময় তাকে বেশ হাসিখুশীও দেখা যায়।
রিয়াদ শরিফ জানান, তাদের সংসারে কোনো দুঃখ-কষ্ট অভাব- অনটন ছিল না। কিন্তু তার স্ত্রী ‘মৌ’ অবাধ স্বাধীনতা চায়, বিয়ের পরেও বেপরোয়া চলাফেরা, পরিবারের সকলের সাথে কঠোর আচরণ, সন্তানের প্রতি অ-দায়িত্ববোদ, বন্ধুবান্দবের সাঙ্গে অবাদে যোগাযোগ রাখতে চায়।
তিনি বলেন, আমার স্ত্রী ‘মৌ’ এর এমন কার্যকলাপ আমি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারিনি। তার কর্মকাণ্ডে নিষিদ্ধ করায় গত-সপ্তাহে তার বাবার বাড়ি চলে যায়। পরে জানতে পারি সে কোথাও চলে গিয়েছে। এখন আমি অনেক কষ্টের মধ্য দিয়েও ভালো আছি। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে অনেক অশান্তিতে ছিলাম। আমি অনেক নির্যাতন সহ্য করেও সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে কোনোভাবেই সংসার করতে রাজি না।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ২০১৮ সালে কাশিয়ানী উপজেলাধীন সাজাইল ইউনিয়নের ৩ নং মাজড়া গ্রামের মফিজুর শেখ এর মেয়ে মৌ খাতুনের সঙ্গে প্রেমের মাধ্যমে বিয়ে হয়। পরে পারিবারিক আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পূর্ণ হয়। বিয়ের কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তাদের একটি কন্যা সন্তান দুনিয়ায় আসেন। তাদের সংসারে নানান বিষয়ে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে মতো পার্থক্য তৈরি হতে থাকে। দীর্ঘ ৮ বছরের সংসারে ফাটল ধরে। এক পর্যায়ে ‘মৌ’ খাতুন বাসা থেকে পালিয়ে যায়। পরে রিয়াদ শরিফ ও তার পরিবার জানতেপারে সে কোথাও চলে গিয়েছে।
অবশেষে গত শনিবার(২০ ডিসেম্বর) পরিবারের সম্মতিতে রিয়াদ শরিফ স্থানীয় কাজীর মাধ্যমে তাদের আপস তালাক দেয়। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়ে মনের আনন্দে রিয়াদ শরিফ ১০ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করেন।
ইউপি সদস্য মোস্তফা হোসেন আজকালের খবরকে জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি নজরে আসে। ভিডিওটি এলাকায় আলোচনার সৃষ্টি করেছে। পরে তৃতীয় মাধ্যমে জানতে পারি আলোচিত বিষয়টি দুই পরিবারের সম্মতিতে না কী আপস তালাকের মাধ্যমে বিচ্ছেদ হয়েছে।

