যশোর প্রতিনিধি
যশোর পালবাড়ি নার্সিং ইনস্টিটিউটে ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগ নতুন করে সামনে এসেছে। এর আগে ‘চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না ১২ শিক্ষার্থী’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পর এবার প্রথম বর্ষের আরও সাত শিক্ষার্থী অভিযোগ তুলেছেন—তাদের অজান্তেই অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন দেখানো হয়েছে।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা জানান, চলতি শিক্ষাবর্ষে পালবাড়ি শাখায় প্রথম বর্ষে নতুন করে ১৮ শিক্ষার্থী ভর্তি হন। এর মধ্যে সাতজনকে চাঁচড়ার মিরপুর ইনস্টিটিউট অব নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কলেজে ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন দেখানো হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষার্থী কিংবা তাদের অভিভাবকদের কাউকেই আগে জানানো হয়নি।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ভর্তি নেওয়ার সময় তাদের জানানো হয়েছিল তারা যশোর ইনস্টিটিউট অব নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কলেজ (পালবাড়ি শাখা)-এ ভর্তি হয়েছেন। ভর্তির ফি পরিশোধ করা হয় পালবাড়ি শাখার ক্যাশ ভাউচারের মাধ্যমে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তারা পালবাড়ি শাখাতেই নিয়মিত ক্লাস করেছেন। কিন্তু সোমবার পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার দাবিতে দিনব্যাপী বিক্ষোভ চলাকালে হঠাৎ করে জানানো হয়—তাদের রেজিস্ট্রেশন অন্য কলেজে।
অভিযোগকারী সাত শিক্ষার্থী হলেন—তামিম হোসেন, সোহাগ মল্লিক, নওসিন রাম্মি, সুবর্ণা বিশ্বাস, সংগীতা অধিকারী, সরাবি জান্নাত পুষ্প ও জান্নাতুল ফেরদৌস ইরানী। তারা বলেন, “চাঁচড়ার ওই প্রতিষ্ঠানের নাম আমরা আগে কখনোই শুনিনি। ভর্তি থেকে ক্লাস—সবই পালবাড়িতে হয়েছে। অথচ রেজিস্ট্রেশন অন্য কলেজে দেখানো হয়েছে, যা স্পষ্ট প্রতারণা।”
একাধিক সূত্র জানায়, পালবাড়ি শাখা ও চাঁচড়া শাখা একই মালিকানাধীন। পালবাড়ি এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচিতি বেশি থাকায় সেখানে শিক্ষার্থীর চাপ বেশি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নীরবে শিক্ষার্থীদের চাঁচড়া কলেজে রেজিস্ট্রেশন দেখানো হয়। এতে চাঁচড়া কলেজে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি দেখানো সম্ভব হয় এবং শিক্ষক-কর্মচারী ব্যয় কমিয়ে আর্থিক সুবিধা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পালবাড়ির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে এ ধরনের ‘ভর্তি ভাগাভাগি’ পদ্ধতি চালু আছে বলেও দাবি সংশ্লিষ্টদের।
অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভর্তি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন রাখা গুরুতর অনিয়ম। ভর্তির কাগজপত্র, রসিদ ও ফরম পালবাড়ি শাখার নামে হলেও রেজিস্ট্রেশন অন্য কলেজে—এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
অভিযোগের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন বলেন, “১২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারছে না—এ তথ্য সঠিক নয়। মোট চারজন পরীক্ষা দিতে পারছে না। এর মধ্যে তিনজন ফি জমা দেয়নি এবং একজনের রেজিস্ট্রেশনে ভুল হয়েছে।”
চাঁচড়া কলেজে ভর্তি দেখানোর বিষয়ে তিনি বলেন, “এটি সত্য। তবে শিক্ষার্থীরা চাইলে আমাদের খরচে তাদের পালবাড়ি শাখায় মাইগ্রেশন করে দেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.