কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় গণ অধিকার পরিষদের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের ২৮ জন নেতা-কর্মী একযোগে দলত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার (২৭ নভেম্বর) রাত ৮টায় কটিয়াদী মডেল প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নূরের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদের কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা বর্তমানে কতিপয় স্বার্থান্বেষী ও অযোগ্য নেতৃত্বের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। জেলা কমিটির অগণতান্ত্রিক আচরণ, সাংগঠনিক সমন্বয়হীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছেন বলে তারা দাবি করেন।
বক্তারা আরও বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী অনেক নেতাকর্মীকে গত ৫ আগস্টের পর পরিকল্পিতভাবে কোণঠাসা করা হয়েছে। কোনো ধরনের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত ছাড়াই কটিয়াদী উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত করে সংগঠনকে নেতৃত্বশূন্য করা হয়। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও নতুন কমিটি গঠন না করায় নেতাকর্মীরা সাংগঠনিক পরিচয় সংকটে ভুগছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জেলা কমিটির ব্যর্থতা ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে একাধিকবার কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করা হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর ফলে হোসেনপুর ও তারাইল উপজেলার পর এবার কটিয়াদী উপজেলাতেও দলত্যাগের ঘটনা ঘটেছে।
কটিয়াদী উপজেলা গণ অধিকার পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক সৈয়দ আলীউজ্জামান মহসিন বলেন,“নূরুল হক নূরের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে।”
বক্তারা অভিযোগ করেন, জেলা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ-২ আসনের দলীয় মনোনীত প্রার্থী জানাব শফিকের অসৌজন্যমূলক আচরণ ও চরম সাংগঠনিক সমন্বয়হীনতার কারণেই তারা দলত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে দলত্যাগের ঘোষণা দেওয়া নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন,সৈয়দ আলীউজ্জামান মহসিন, মিজানুর রহমান, মো. শরীফুজ্জামান, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, তাবাসসুম হোসাইন, আশিকুর রহমান, মো. সাদেক হোসেন খোকা, মো. রফিকুল ইসলাম ও মো. স্বপন মিয়া। এছাড়াও আচমিতা ইউনিয়ন গণ অধিকার পরিষদের ২৮ জন সদস্য একযোগে দলত্যাগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা স্পষ্ট করে জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে তাদের আর কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক নেই। ভবিষ্যতে তাদের রাজনৈতিক কর্মপন্থা পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে।

