রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
শীতকাল শুরু হতেই তেরখাদা উপজেলার বিল ও জলাশয়ে অতিথি পাখি শিকার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নজরদারি শিথিল থাকায় শিকারচক্র দিন দিন আরও সক্রিয় হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছরের মতো এবারও খাদ্য ও আশ্রয়ের সন্ধানে সাইবেরিয়ার দূর থেকে তেরখাদার ছয় ইউনিয়নের বিভিন্ন বিল, খাল ও জলাশয়ে অতিথি পাখি এসেছে। কিন্তু নিরাপদ আশ্রয়স্থল এখন শিকারিদের জন্য ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভুতিয়ার বিল এলাকার নাচুনিয়া, ইন্দুহাটি, পাখিমারা, নৌকাডুবি, আড়কান্দি ও আউরোবুন্নি গ্রামসহ বাসু খালী বিল এলাকার ইখড়ি, কাটেংগা, বারাসাত, কোলা, নলামারা ও হাড়িখালীসহ বিভিন্ন ছোট-বড় বিলে পাখি শিকার চলছে। শিকারিরা জালের ফাঁদ, বিষটোপ, বড়শিসহ বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করছে। এমনকি ভ্যাপের সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে পাখি নিধনের অভিযোগও উঠেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পাখি শিকার চলে। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে প্রতিবছর সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা অতিথি পাখিরা এবার নিরাপদ নয়। উপজেলায় বিল ও জলাশয়ে আগত পাখির মধ্যে রয়েছে কালকুচ, হাঁসপাখি, হাঁস ডিঙ্গি, ডুঙ্কর, কাদাখোঁচা, চেগা, কাচিচোরা, মদনটাক, শামুখখোলা, পানকৌড়ি ও বগসহ নানা প্রজাতি।
এদিকে, কাটেংগা বাজার, জয়সেনা বাজার, তেরখাদা বাজারসহ বিভিন্ন হাটে এসব পাখি কৌশলে বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রকাশ্যে বিক্রি না হলেও গোপনে ক্রেতা সংগ্রহ করে শিকারিরা পাখি সরবরাহ করছে।
উপজেলার নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ.বি.এম. সারোয়ার রাব্বী জানান, “অতিথি পাখি নিধন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরিবেশবিদরা সতর্ক করেছেন, দ্রুত নজরদারি জোরদার না করা হলে অতিথি পাখির নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে পরিচিত তেরখাদার বিল-জলাশয় ভবিষ্যতে পাখিশূন্য হয়ে যেতে পারে।

