মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ তোলার মৌসুম শেষের পথে। এরই মধ্যে বিভিন্ন হাটবাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। মুড়িকাটা তোলার পর একই জমিতে হালি পেঁয়াজ রোপণ শুরু করায় এখন জমজমাট হয়ে উঠেছে হালি পেঁয়াজের চারার বাজার।
উপজেলার কৃষকরা জানান, মুড়িকাটা পেঁয়াজ তোলার পর অনেকেই সঙ্গে সঙ্গে হালি পেঁয়াজ রোপণ করছেন। কেউ কেউ জমি প্রস্তুতের কাজ করছেন। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে নওপাড়া, রায়পুর, মেগচামী, কোরকদী, কামারখালী, বাগাট ও জাহাপুর ইউনিয়নে পেঁয়াজের আবাদ তুলনামূলক বেশি। এসব এলাকায় মূলত কিং ও তাহেরপুরি জাতের পেঁয়াজের চাষ হয়ে থাকে।
চলতি মৌসুমে মধুখালী উপজেলায় ৪ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কোরকদী ইউনিয়নের পেঁয়াজচাষি কার্তিক কুমার বলেন, “মুড়িকাটা পেঁয়াজ তুলে একই জমিতে হালি পেঁয়াজ রোপণ শুরু করেছি। এতে খরচ তুলনামূলক কম। বিঘাপ্রতি প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বাজারমূল্য ভালো থাকলে প্রান্তিক কৃষকরা লাভবান হবেন এবং ভবিষ্যতে পেঁয়াজ চাষে আরও আগ্রহী হবেন।”
আড়পাড়া ইউনিয়নের কৃষক আকরাম জানান, “মুড়িকাটা পেঁয়াজ বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না, কিন্তু হালি পেঁয়াজ সারা বছর ঘরে রাখা যায়। সে কারণে হালি পেঁয়াজে ঝুঁকি কম। এই পেঁয়াজ চারা তৈরি করে পরে জমিতে রোপণ করতে হয় এবং ৮০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যেই ফলন পাওয়া যায়।”
রায়পুর ইউনিয়নের ব্যাসদী গ্রামের চাষি রাসেল আহমেদ বলেন, “আমি দেড় একর জমিতে হালি পেঁয়াজ চাষ করি। গত মৌসুমে প্রায় ২০০ মণ পেঁয়াজ পেয়েছিলাম। খরচ বাদ দিয়ে প্রায় এক লাখ টাকা লাভ হয়েছিল। এ বছরও দেড় একর জমিতে হাইব্রিড চারা রোপণ করেছি। আশা করছি এবার আরও বেশি লাভ হবে।”
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, প্রতিবছর মধুখালীতে পেঁয়াজের আবাদ বাড়ছে। চলতি বছর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ ব্যবহার ও আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি অনুসরণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক কৃষক মুড়িকাটা পেঁয়াজ তুলে বাজারজাত করেছেন এবং একই সঙ্গে হালি পেঁয়াজ রোপণের কাজও শুরু করেছেন।

