বাগেরহাটের মোল্লাহাটে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজার আর মাত্র ১০ দিন বাকি। এই দুর্গোৎসব উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিরাজ করছে সাজ শজ রব। শেষ মুহুর্তে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
কাশফুল ফোটা ও শিউলি শরতের শারদীয় দূর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ রুপ দিতেই মন্দিরগুলোতে চলছে দূর্গা পূজার প্রস্ততি। দেবীকে স্বাগত জানাতে সর্বত্র আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে হিন্দুধর্মাবলম্বী প্রত্যকটি পারিবারে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যই দেবী দূর্গার স্বর্গ থেকে আগমন ঘটেছিল মর্ত্যলোকে।
এরই ধারাহিকতায় হিন্দুধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করে। আগামী ১১ অক্টোবর সোমবার ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে শারদীয় দূর্গাপূজা।
হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষসহ সব বয়সী মানুষ শারদীয় দূর্গাপূজাকে স্বার্থক করতে প্রহর গুনছে। সব মিলিয়ে ব্যাপক প্রস্তুুতি চলছে প্রতিটি পূজামন্ডপে।
মোল্লাহাট উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা। পূজার সময় যতই ঘনিয়ে আসছে প্রতিমা তৈরির কাজও ততই দ্রুতগতিতে করছেন শিল্পীরা।
এদিকে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে এবছর জাঁক-জমকভাবে পূজার আয়োজন করেছেন না আয়োজকরা। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শনার্থীদের প্রতিমা ও পূজা দেখার ব্যবস্থা করছেন তারা। তবে মন্দির ও সড়ক গুলোতে করা হবে আলোকসজ্জা।
উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও খড় কাদা মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। আবার কোথাও শিল্পীর সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় কৃত্রিম জীবন পাচ্ছেন মা দূর্গা, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর ও শিব মূর্তি। কোনো কোনো মূর্তিতে পরানো হয়েছে শাড়ি, হাতের বালাসহ অন্যান্য গয়না। এখন শুধু রঙের কাজ বাকি।
উপজেলার কাহালপুর গ্রামে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কালিপদ বিশ্বাসের বাড়ি সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের সভাপতি কল্লোল বিশ্বাস পলু জানান, প্রতি বছরই আমরা দূর্গোৎসব পালন করি। দেবী দূর্গা আগমন হবে ঘোড়াই চড়ে আর প্রস্তান হবে দোলায় চড়ে। ঢাকের বাজনা আর, উলুধ্বনি আর আরবিতে মুখরিত হয়ে উঠবে মোল্লাহাটের পাড়া মহল্লা। করোনা ভাইরাসের কারনে এবছর স্বাস্থ্য বিধি মেনে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
আমরা উৎসবমূখর পরিবেশেই ধর্মীয় উৎসব পালন করি এ ক্ষেত্রে প্রসাসন আমাদের যথেষ্ট সহায়তা করে থাকে।
মোল্লাহাট উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ বোস বলেন, প্রতি বছর ধর্মীয় সম্প্রতি বজায় রেখে সার্বজনীন দূর্গা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এ উৎসবকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই মোল্লাহাট উপজেলার ৮৪ টি মন্দিরে প্রতিমা স্থাপনের কাজ চলছে। গত বছর ৮২ টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। করোনার কারনে সবাইকে পূজা মন্ডপে অবশ্যই স্বাস্থ্য বিধি মেনে পূজা করতে আসতে হবে।
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় আছেন।
সনাতন ধর্মালবম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপূজা শুরু হবে ১১ অক্টোবর। ১৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দূর্গোৎসব।
মোল্লাহাট থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সোমেন দাশ নবধারা কে জানান, পূজা উপলক্ষে মন্দির কেন্দ্রীক গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এলাকা কেন্দ্রীক বিট অফিসাররা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া পূজার দিনগুলোতে আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে এবং প্রতিটা মন্ডপের কমিটিদের স্বেচ্ছা সেবক নিয়োগের ব্যাপারে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দিয়েছে।