হিন্দু না মুসলিম?
স্বপ্ন শাহিন খান
হিন্দু না মুসলিম?
কেউ বলেন তফাতটা রক্তে লুকিয়ে আছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমি জন্মসূত্রে মুসলিম,
কিন্ত রক্তের কথা হিসেব করলে মানুষ।
জন্মের ঠিক সঙ্গে সঙ্গেই রক্তের প্রয়োজন হওয়ায় এগিয়ে আসেন আমার বাবার-ই এক নিকট বন্ধু,
নিবারণ ঘোষ। হ্যাঁ, ওনার রক্তেই বেঁচে আছি।
কেউ বলেন তফাত না-কি আচার-ব্যবহারে।
কি জানি বাপু! কলেজের টিফিন টাইমে আমি আর সন্দ্বীপ দিব্যি কাড়াকাড়ি করে টিফিন খেয়েছি।
কখনও বা আমি ভাগে কম পেয়েছি দেখে ও নিজেই হাতে করে কিছুটা খাইয়ে দিয়েছে। কই ওর খাওয়ানোর কায়দা তো আলাদা ঠেকেনি কখনও…
কেউ আবার বলেন তফাতটা লুকিয়ে প্রার্থনা করায়।
আমি নেহাত ভ্রমণের তাগিদেই আজমীর শরীফ গিয়েছিলাম। আমার মাথায় ময়ূরের পালকের গুচ্ছ রেখে চোখ বুজে ওখানকার মৌলবী ভদ্রলোক যতটা ভক্তি সহকারে প্রার্থনা করলেন—
ঠিক ততটাই প্রশান্তচিত্তে সোমনাথ মন্দিরের সেবায়েত মাথায় হাত রেখে বলেছিলেন ‘আয়ুষ্মান ভব’।
হিন্দু আর মুসলিম বিভেদের কিছুই বোঝে না ওই ছোট্টো মেয়েটা, যে প্রত্যেক বৃহস্পতিবার সন্দ্বীপের মায়ের কাছে পদ্মফুল বিক্রি করতে আসে। একদিন কথায় কথায় ওকে নাম জিজ্ঞেস করতেই কেমন যেন এড়িয়ে গেলো। বুঝলাম সবটা। হঠাৎ হাতটা ধরে সন্দ্বীপ বলল, ‘যা, একটা ফুল তুলসী তলায় রেখে আয় তো’। কিছুক্ষণ দোনা-মনা করে রাখল, তারপর একটা অদ্ভুত চাহনি রাখল আকাশ পানে। বিড় বিড় করে কি বলল জানি না। হয়ত অন্তর্যামী বুঝে থাকবেন। সেদিন থেকে নূরজাহান প্রত্যেক বৃহস্পতিবার কাকিমা’কে এক গোছা পদ্ম দিয়ে যায়— তুলসী তলায় ফুল রেখে যায়, পূর্ণিমার পুজোয় নিয়ম করে প্রসাদ খেতে আসে।
নূরজাহান সন্দ্বীপকে ভালোবাসে কি-না জানি না,
কিন্তু সন্দ্বীপ বড্ড ভালোবাসে।
আর এখন?
হিন্দু না মুসলিম?
কেউ বলেন তফাতটা রক্তে লুকিয়ে আছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমি জন্মসূত্রে মুসলিম,
কিন্ত রক্তের কথা হিসেব করলে মানুষ।
জন্মের ঠিক সঙ্গে সঙ্গেই রক্তের প্রয়োজন হওয়ায় এগিয়ে আসেন আমার বাবার-ই এক নিকট বন্ধু,
নিবারণ ঘোষ। হ্যাঁ, ওনার রক্তেই বেঁচে আছি।
কেউ বলেন তফাত না-কি আচার-ব্যবহারে।
কি জানি বাপু! কলেজের টিফিন টাইমে আমি আর সন্দ্বীপ দিব্যি কাড়াকাড়ি করে টিফিন খেয়েছি।
কখনও বা আমি ভাগে কম পেয়েছি দেখে ও নিজেই হাতে করে কিছুটা খাইয়ে দিয়েছে। কই ওর খাওয়ানোর কায়দা তো আলাদা ঠেকেনি কখনও…
কেউ আবার বলেন তফাতটা লুকিয়ে প্রার্থনা করায়।
আমি নেহাত ভ্রমণের তাগিদেই আজমীর শরীফ গিয়েছিলাম। আমার মাথায় ময়ূরের পালকের গুচ্ছ রেখে চোখ বুজে ওখানকার মৌলবী ভদ্রলোক যতটা ভক্তি সহকারে প্রার্থনা করলেন—
ঠিক ততটাই প্রশান্তচিত্তে সোমনাথ মন্দিরের সেবায়েত মাথায় হাত রেখে বলেছিলেন ‘আয়ুষ্মান ভব’।
হিন্দু আর মুসলিম বিভেদের কিছুই বোঝে না ওই ছোট্টো মেয়েটা, যে প্রত্যেক বৃহস্পতিবার সন্দ্বীপের মায়ের কাছে পদ্মফুল বিক্রি করতে আসে। একদিন কথায় কথায় ওকে নাম জিজ্ঞেস করতেই কেমন যেন এড়িয়ে গেলো। বুঝলাম সবটা। হঠাৎ হাতটা ধরে সন্দ্বীপ বলল, ‘যা, একটা ফুল তুলসী তলায় রেখে আয় তো’। কিছুক্ষণ দোনা-মনা করে রাখল, তারপর একটা অদ্ভুত চাহনি রাখল আকাশ পানে। বিড় বিড় করে কি বলল জানি না। হয়ত অন্তর্যামী বুঝে থাকবেন। সেদিন থেকে নূরজাহান প্রত্যেক বৃহস্পতিবার কাকিমা’কে এক গোছা পদ্ম দিয়ে যায়— তুলসী তলায় ফুল রেখে যায়, পূর্ণিমার পুজোয় নিয়ম করে প্রসাদ খেতে আসে।
নূরজাহান সন্দ্বীপকে ভালোবাসে কি-না জানি না,
কিন্তু সন্দ্বীপ বড্ড ভালোবাসে।
আর এখন?
পেশায় আমি বিদ্রোহী,
ধর্ম ‘মানবতা’ জেনো।
আরতি আর ভোরের আজানে,
আমি তফাত করিনি কখনও।
2 thoughts on "হিন্দু না মুসলিম? -স্বপ্ন শাহিন খান"