মেজবা রহমান, স্টাফ রিপোর্টারঃ
গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ফলপ্রসূ আলোচনার প্রেক্ষিতে চলমান আন্দোলন প্রত্যহার করে নিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
ভর্তি ফি কামানোসহ ৭ দফা দাবীতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে আন্দোলনে নামে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
সেমিস্টার ফি, হল ফি, পরিবহন ফি কমানো ও বিভাগ উন্নয়ন ফি বাতিলসহ ৭ দফা দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলন শুরু করেন তারা। প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনের মূল ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ছিল, প্রতি সেমিস্টারের বেতন ১২০০ টাকার বদলে ৬০০ টাকা, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ২০০ টাকার বদলে ২০ টাকা, ছাত্র কল্যাণ ১৫০ টাকার বদলে ৫০ টাকা, আইডি কার্ড ৪০০ এর বদলে ৫০, চিকিৎসা ফি ২০০ এর বদলে ৫০, পরিবহন ফি ৬০০ এর বদলে ৩০০, রোভার স্কাউটস ও বিএনসিসি ১০০ এর বদলে ৪০, সিলেবাস ১৫০ টাকার বদলে ৫০ টাকা করতে হবে। আর কম্পিউটার ও ইন্টারনেট, স্টুডেন্ট গাইডেন্স অ্যান্ড কাউন্সিলিং, বিভাগ উন্নয়ন, কেন্দ্র ফিসহ সকল অমূলক ফি বাতিল করতে হবে। এছাড়া প্রতি ক্রেডিট ফি ৫০, প্রবেশপত্র ফি ৫ টাকাসহ হলের সিট ভাড়া ৭৫ এবং সংস্থাপন ফি ৭৫ টাকা করতে হবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে ভিসিসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বেঠকে বসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেখানে ফলপ্রসূ আলোচনার প্রেক্ষিতে শিক্ষাথীদের পক্ষ থেকে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে বিকাল ৪ টা নাগাদ উপাচার্য ড. এ কিউ এম মাহবুব সাক্ষাত করতে এসে বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীদের ১৮ দফা দাবির মধ্যে কিছু কিছু তোমাদের অধিকার, সেগুলো দাবি করার কিছুই নাই, ওগুলো এমনি মেনে নেয়া হবে। আর কিছু দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিবেচনা করে মেনে নিয়েছেন। বাকি যেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে নেই সেগুলো ইউজিসি কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”
উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, “ইউজিসি থেকে আমাদের অনুদান কম দেয়া হয় আমরা আরো অনুদানের অধিকার রাখি। আমি ইউজিসি কর্তৃপক্ষের কাছে পর্যাপ্ত অনুদানের দাবি করব তাতে করে তোমাদের বিভিন্ন ফি কমে যাবে। আমরা জাতির জনকের নামাঙ্কিত গোপালগঞ্জে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের যৌক্তিক অনুদান প্রদান করতে ইউজিসি কর্তৃপক্ষ বাধ্য।”
তিনি আরো বলেন, “তোমরা ক্লাসে ফিরে যাও, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করো। এখন কোন ফি দেয়ার প্রয়োজন নেই, ইউজিসি থেকে সিদ্ধান্ত পাওয়ায় পরে সকল ফি প্রদান করবে।”
এসময় উপাচার্যের সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আইন অনুষদের ডিন ড. রাজিউর রহমান, হল প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি এবং বানিজ্য অনুষদের ডিন মো. রোকনুজ্জামান,বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ড. সালেহ আহমেদ, কৃষি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. মোজাহার আলীসহ বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকবৃন্দ।
এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, “মাননীয় উপাচার্য স্যারের কথায় আমরা সন্তুষ্ট এবং একমত পোষণ করছি। এখন আমরা স্যারের কাছ থেকে লিখিত জবাব চাই এবং আজ থেকে আমরা আমাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করলাম।”
প্রসঙ্গত, গত ২৭ অক্টোবর রাতে বিজয় দিবস হলের সম্মুখে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ফি এর নোটিশের প্রতিবাদে প্রথম আন্দোলনের সূচনা করে আজ তৃতীয় দিনের মতো অন্দোলন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।