মোঃ মিজানুর রহমান,কালকিনি ডাসার প্রতিনিধি:
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে। শুধু তাই নয় এবারই প্রথমবারের মতো, জামানত হারিয়েছেন চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী মো. মজিবর রহমান মোল্লা। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হওয়া মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়ন নির্বাচনে এই ভরাডুবি হয়। এ ইউনিয়নের নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মৌসুমী হক সুলতানা।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মৌসুমী হক সুলতানা পেয়েছেন ৫ হাজার ৪০২ ভোট, তার নিকটতম হয়েছেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী তোফাজ্জেল হোসেন গেন্দু কাজী, তিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ৫৭৩ ভোট। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ মজিবর রহমান মোল্লা পেয়েছেন মাত্র ৩২৫ ভোট আর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী লিয়াকত হোসাইন পেয়েছেন ৩২২ ভোট। ল²ীপুর ইউনিয়নে ১৫ হাজার ৫১৪ জন ভোটারের মধ্যে ১০ হাজার ৬২২ জন ভোটার তাদের ভোট প্রদান করেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়ে বিজয়ী প্রার্থী ৫ হাজার ৭৭ ভোট বেশি পেয়েছে। আর প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোটও পাননি আওয়ামী প্রার্থী। এ কারণে তাকে জামানত হারাতে হয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা বলেন, এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী অনেকের পছন্দের ছিল না। তারা প্রকাশ্যে বিরোধিতা করতে না পারলেও টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন নিয়েছেন। সে কারণে স্থানীয় আওয়ামীলীগের কোন দায়িত্বশীল নেতা তার পক্ষে কাজ করেনি। এরচেয়ে যারা দলের জন্যে কাজ করেছেন, তাদেরই ভোট দিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নৌকার প্রাথী মো. মজিবর রহমান মোল্লাকে সাধারণ ভোটারদের অনেকেই চেনেন না। তিনি নৌকার মনোনয়ন বাগিয়ে নিলেও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেখা মিলত না। দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও তাকে ভালভাবে মেনে নেয়নি। স্থানীয় লোকজনের কাছে জনপ্রিয় না হওয়ায় তার পক্ষে জোরালো কোন প্রচার-প্রচারণা হয়নি। যে কারণে আওয়ামীলীগের দুর্গায় নৌকা প্রতীক নিয়েও জামানত হারিয়েছেন।
পরাজয়ের কারণ জানতে আওয়ামী লীগের প্রাথী মো. মজিবর রহমান মোল্লাকে একাধিকবার ফোন দিয়ে ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তিনি সাড়া দেননি।
তবে পরাজয় প্রসঙ্গে কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপিকা তাহমিনা সিদ্দিকা নবধারা কে বলেন, ‘মাদারীপুরের জনপদ আওয়ামীলীগের ঘাঁটি। এখানে আওয়ামীলীগের যত জাতীয় নির্বাচন হয়েছে, সবটাতেই জয়ী হয়েছেন। কিন্তু এবার ইউপি নির্বাচনে এক প্রভাবশালী নেতার অনৈতিক বাণিজ্যের কারণে নৌকার পরাজয় হয়েছ। এতে আমরা আশাহত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব দেখে হাইব্রিড জাতীয় নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিবেন বলে আমার বিশ্বাস।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে কালকিনি ও ডাসার উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে একজন চেয়ারম্যান পদে বিনাপ্রতিন্ধন্দিতায় নির্বাচিত হয়েছে। বাকি ১২ ইউনিয়নের মধ্যে ৯টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ৩টিতে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।