আজাহার আলী, বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে, সবুজের সমারোহে, স্বপ্ন আর জ্ঞানের অপূর্ব সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছে এক দীপ্ত আলোকময় প্রতিষ্ঠান পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। বগুড়া সদর উপজেলার অন্তর্গত গোকুল এলাকায় প্রায় ৯ (নয়) একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন জ্ঞান, সংস্কৃতি ও মানবিকতা বিকাশের এক তীর্থভূমি। এখানে প্রতিটি ক্লাসরুম জ্ঞানের জলাধার, প্রতিটি পাঠ যেন বাতাসে ভেসে আসা কবিতার ছন্দ।
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও সরকারের অনুমোদনপ্রাপ্ত বগুড়ার প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে। প্রাচীন সভ্যতার পীঠস্থান পুণ্ড্রবর্ধনের নামানুসারে নামকরণ করা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিক্ষার মানোন্নয়ন, গবেষণা, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও মানবিক মূল্যবোধের বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চারটি অনুষদের অধীনে ১৯টি প্রোগ্রামে পাঠদান চলমান। দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত এবং প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী কৃতিত্বের সাথে কোর্স সম্পন্ন করেছেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ অর্জন করেছে এবং অনেক শিক্ষকও উচ্চতর ডিগ্রির জন্য বিদেশে গমন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখধাঁধানো সবুজ ক্যাম্পাস, খোলা আকাশের নিচে মুক্ত চিন্তার পরিসর, রাজনীতি, ইভটিজিং ও মাদকমুক্ত পরিবেশ শিক্ষার সুষ্ঠু আবহ তৈরি করেছে। রয়েছে মাল্টিমিডিয়া সমৃদ্ধ আধুনিক শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাব, ওয়াইফাই সুবিধাসম্পন্ন ক্যাম্পাস, সমৃদ্ধ পাঠাগার, নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা, ক্যান্টিন, নিজস্ব খেলার মাঠ, সহশিক্ষা কার্যক্রম এবং নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পৃথক আবাসনের সুব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অস্বচ্ছল, মেধাবী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তার সুযোগ প্রদান করছে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শিক্ষার মান উন্নয়নে পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। যার মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দি ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান ফ্রিন্ট, দি গ্লোবাল হেলথ অ্যাকাডেমিক, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়ংডং ইউনিভার্সিটি গ্লোবাল ক্যাম্পাস, ভারতের ব্যাঙ্গালোর ভিত্তিক আচারিয়া ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সায়েন্স এবং আয়ারল্যান্ড ভিত্তিক আসেম এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্স হাব ফর লাইফ লং লার্নিং।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের মাননীয় সভাপতি এবং টিএমএসএস-এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. হোসনে-আরা বেগমের নেতৃত্বে পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নৈতিক ও মানবিক গুণাবলি বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই শিক্ষা, গবেষণা, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা এবং মানবিক মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করছে, তাদের সুপ্ত প্রতিভা জাগিয়ে ভবিষ্যতের নেতৃত্বগুণে সমৃদ্ধ এক প্রজন্ম গড়ে তুলছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টাসহ সকল সম্মানিত সদস্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা – কর্মচারীদের সার্বিক সহযোগিতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে এক নিরলস উন্নয়নের পথে।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ইতোমধ্যে টিএমএসএস-এর অর্থায়নে ১২টি গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
সবুজের আলিঙ্গনে ঘেরা, নিসর্গের কোলে জেগে ওঠা এই বিদ্যাপীঠ কেবল একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয় বরং মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও সৃজনশীলতার মশাল হাতে এক দীপ্ত ভবিষ্যতের নির্মাতা। সত্য, জ্ঞান ও স্বপ্নের আলো নিয়ে পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয় যেন ভবিষ্যতের দিগন্তে উদিত এক সূর্য, যার আলোকছায়ায় প্রসারিত হচ্ছে সম্ভাবনার অপার প্রান্তর।