কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেল ৪টা থেকে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানো হয়। এর আগে মণ্ডপে মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয় সিঁদুর খেলা ও বরণ।
বিজয়া দশমীর দিনটি মন্দের উপর ভালের বিজয়ের প্রতীক হিসেবে পালিত হয়। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, মানুষের অন্তরের আসুরিক প্রবৃত্তি—কাম, ক্রোধ, লোভ, হিংসা ইত্যাদিকে বিসর্জন দিয়ে শুভ, মঙ্গল ও ভ্রাতৃত্ববোধের পথে এগিয়ে যাওয়াই এই দিনের মূল তাৎপর্য।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী তিথিতে চণ্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। এরপর পাঁচ দিন ধরে উপজেলার ২৮টি পূজামণ্ডপে চলে পূজা-অর্চনা। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে।
বিজয়া দশমীর আরেক বিশেষ অনুষঙ্গ হলো সিঁদুর খেলা। এ দিনে বিবাহিত নারীরা দেবীর চরণে সিঁদুর অর্পণ করেন এবং তা একে অপরের কপালে ও মুখে লাগিয়ে দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন ও সৌভাগ্যের কামনা করেন। পরে ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করে মিষ্টিমুখ করেন।
আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হাতিয়র হিন্দুপাড়া পূজামণ্ডপের সভাপতি শ্রী সুদেব চন্দ্র বর্মন বলেন,“সারা বছর আমরা এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করি। বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে প্রতিমা দর্শনের অনুভূতি একেবারে ভিন্নরকম।”
প্রথা অনুযায়ী, প্রতিমা বিসর্জনের পর শান্তিজল মণ্ডপে এনে মঙ্গলঘটে রাখা হয়। এই জল পরবর্তী বছর পুজার সময় প্রতিমায় ছিটিয়ে উৎসব শুরু করা হয়। কালাইয়ের রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ধ্যা আরতির পর জামুরজান পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।
কালাই উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কুমার মহন্ত বিটল বলেন,“এবার কালাই উপজেলায় ২৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয় এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।”
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন জানান,“২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে।”